ভারতে এক কথিত ধর্মগুরুর আশ্রমে অভিযান চালিয়ে স্বর্ণ, হীরাসহ ৫০০ কোটি রুপির বেশি অবৈধ সম্পদ জব্দ করেছে দেশটির আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা।
ভারতের জাতীয় বিমা কোম্পানির একজন কেরানি ছিলেন। পরে তিনি নিজেকে কৃষ্ণের দশম অবতার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেন। আয়কর ফাঁকি দেয়ার অভিযোগে সেই ‘কল্কি ভগবান’-র দেশের নানা আশ্রমেই এ বার হানা দিলেন আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তারা। উদ্ধার হয়েছে হিসাব বহির্ভূত নগদ ৯৩ কোটি রুপি। সঙ্গে স্বর্ণ ও হীরা মিলিয়ে ৪০৯ কোটি রুপির সম্পত্তি।
আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘কল্কি ভগবান’-এর আসল নাম বিজয় কুমার। বরাবরই তার আত্ম্যাধিক বিষয়ে ঝোঁক ছিল। আশির দশকের মাঝামাঝি তিনি চাকরি ছেড়ে চিত্তুরে একটি স্কুল খোলেন। নাম দেন ‘জিবাশ্রম’। তার শিষ্যদের আধ্যাত্মিক পাঠ দিতেন তিনি। ক্রমে তার শিষ্যের সংখ্যা বাড়তে থাকে। চিত্তুরে তিনি ‘ওয়াননেস’ নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও খুলে ফেলেন। প্রচুর সেলিব্রিটি এবং বড় ব্যবসায়ীও তার শিষ্য হয়ে যান।
তিনি নিজেকে কৃষ্ণের দশম অবতার ‘কল্কি’ হিসেবে ঘোষণা করেন নব্বইয়ে দশকে। অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্নাটকে তার প্রচুর আশ্রম রয়েছে। এ ছাড়া বিদেশেও তার যাতায়াত রয়েছে। বিদেশে অনেক জায়গায় গিয়ে তিনি নিজের মতবাদ প্রচার করে এসেছেন। দেশ-বিদেশে তার যাবতীয় আশ্রমের অ্যাকাউন্ট দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন স্ত্রী পদ্মাবতী এবং ছেলে এনকেভি কৃষ্ণ।
ভারতীয় আয়কর দপ্তর বলছে, বিজয় কুমারের প্রতিটা আশ্রমেরই হিসাব বহির্ভূত আয় রয়েছে। সেই আয় সরকার থেকে গোপন রাখা হত। এই তথ্য হাতে পাওয়ার পরই ১৬ অক্টোবর থেকে বিভিন্ন আশ্রমে তল্লাশি শুরু করেন আয়কর কর্মকর্তারা।
সূত্রের খবর, তার আশ্রমে ১৮ কোটি রুপির সমমান নগদ মার্কিন ডলার উদ্ধার হয়েছে। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৮৮ কেজি স্বর্ণ, যার মূল্য ২৬ কোটি রুপি এবং ১ হাজার ২৭১ ক্যারাটের হীরা। সব মিলিয়ে মোট ৫০০ কোটি রুপিরও বেশি হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছেন আয়কর কর্মকর্তারা।
টাইমস/এসআই