লাদাখ সীমান্তে চীন-ভারতের সেনাদের হাতাহাতি বা ধস্তাধস্তি নতুন কিছু নয়। দা-কোদাল পাশাপাশি থাকলে ওরকম একটু টুংটাং হয়ই। কিন্তু গত সোমবার লাদাখ সীমান্তে যে ঘটনা ঘটেছে তা মোটেই টুংটাং নয়। রীতিমত যুদ্ধাবস্থা।
চীনা সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে এরই মধ্যে ভারতের ২৩ জন সৈনিক নিহত হয়েছেন। হাসপাতালে রয়েছেন আরও কয়েকজন। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন চীনা সেনাও নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে সংঘর্ষের পর প্রায় ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ভারতের পক্ষ্য থেকে খুব একটা লম্ফঝম্ফ চোখে পড়েনি। উভয় দেশ এখন শীতল যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। কূটনৈতিক ও আলোচনার টেবিলে উভয় দেশই হয়তো জয়লাভের চেষ্টা করবে। কিন্তু ওসব নিয়ে তো আর সাধারণ মানুষের মাথা ব্যথা নেই। মানুষ জানতে চাইছে আসলেই কি ঘটেছিল লাদাখের গালওয়ান নদীর তীরে? কেন আকষ্মিক এই রক্তারক্তি?
যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত
ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জার্মান ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে লাদাখের সুউচ্চ পর্বতমালায় গালওয়ান নদীর পূর্ব পার ধরে নিয়মিত টহলে বের হয় ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিহার রেজিমেন্টের একটি দল।
টহল দেয়ার সময় ভারতীয় সেনারা গালওয়ান নদীর পশ্চিম পারে ভারতের ভূখন্ডে চীনা সেনাদের বসানো তাবু লক্ষ্য করেন। এসময় ভারতীয় সেনাদের টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে চীনা সেনাদের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে।
এক পর্যায়ে পরিস্থিতি সংঘর্ষে রুপ নেয়। ওই সময় গালওয়ান নদী ও সংলগ্ন উপত্যকায় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে ছিল। সংঘর্ষ শুরুর আগে চীনা বাহিনী আকস্মিক ভাবে ভারতীয় সেনাদের টহল দলের ওপর হামলা চালায়। এসময় চীনা সেনারা কাঁটাতার জড়ানো লোহার রড দিয়ে ভারতীয় সেনাদের বেধড়ক মারধর করে।
তখন ভারতীয় সেনারাও পাল্টা হামলা চালায়। সংঘর্ষ শুরু হলে চীনা সেনারা অনেক ভারতীয় জওয়ানকে ধরে ধরে গালওয়ান নদীতে ফেলে দেয়। পরে মঙ্গলবার সকালে গালওয়ান নদী থেকে ভারতীয় সেনাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে আহত ভারতীয় সেনাদের দাবি, সামান্য হাতাহাতি শুরু হতেই চীনা সেনারা রডে কাঁটাতার জড়িয়ে আক্রমণ করে। ওই উচ্চতায় অক্সিজেনের অনেক ঘাটতি ছিল। তার মধ্যেই দুই পক্ষের সংঘর্ষ চরমে পৌঁছায়।
প্রায় আট ঘণ্টা ধরে চলা সংঘর্ষের পর চীনা সেনারা বেশ কয়েকজন ভারতীয় সেনাকে আটক করে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়েও তাদের ওপর নির্যাতন চালায় চীনা বাহিনী। পরে উভয় পক্ষের বৈঠকের মাধ্যমে আটকদের ফেরত দেয় চীন।
ছবি- সংগৃহিত
টাইমস/এসএন