‘আয়া সোফিয়া’ ইস্যূতে তুরস্কের পাশে রাশিয়া

বিখ্যাত আয়া সোফিয়া জাদুঘরকে মসজিদ হিসেবে ঘোষণা করেছে তুরস্কা। এই আয়া সোফিয়া আগে মসজিদ-ই ছিল। কিন্তু ঐতিহাসিক এ স্থাপনাকে মসজিদ হিসেবে পুনঃঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তুরস্কের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতির মাঝেই এবার আয়া সোফিয়াকে মসজিদ করার প্রসঙ্গে তুরস্কের পাশে দাড়ালো রাশিয়া।

তেহরান ভিত্তিক সংবাদমাধ্যশ পার্স টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ভেরশিনিন বলেছেন, আয়া সোফিয়া জাদুঘরকে মসজিদে রুপান্তরের বিষয়টি তুরস্কের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এটা নিয়ে বাইরের দেশের হস্তক্ষেপ কাম্য নয়।

রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ এই নেতা এমন সময় তুরস্কের পাশে দাড়ালেন, যখন আয়া সোফিয়া ইস্যূতে পশ্চিমা দেশগুলো ও অর্থোডক্স চার্চের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক ভাবে তুর্কি সরকারের এই পদক্ষেপে নিন্দা জানানো হয়েছে।

এদিকে রাশিয়ার ভলোকলামস্ক শহরের অর্থোডক্স চার্চের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, আয়া সোফিয়া জাদুঘরকে মসজিদ হিসেবে ঘোষণা করা খ্রিস্টানদের মুখে চপেটাঘাতের শামিল।

এর আগে তুরস্কের সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান গত শুক্রবার দেশটির আয়া সোফিয়া জাদুঘরকে মসজিদ হিসেবে ঘোষণা করেন।

ওই সময় এরদোগান বলেন, শিগগিরই এই ঐতিহাসিক স্থাপনা মুসলমানদের নামাজ আদায়ের জন্য খুলে দেয়া হবে। তুর্কি জনগণ এরদোগানের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও পশ্চিমা দেশগুলো এর তীব্র বিরোধিতা করে আসছে।

প্রসঙ্গত, ৩৬০ খ্রিষ্টাব্দে সর্বপ্রথম এটির ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন রোমান সাম্রাজ্যের প্রথম খ্রিস্টান সম্রাট কনস্টান্টিনোপল। পরে আয়া সোফিয়ার বর্তমান কাঠামো তৈরি করেন সম্রাট জাস্টিনিয়ান।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১২০৪ সাল পর্যন্ত আয়া সোফিয়া ছিল ইস্টার্ন অর্থডক্স ক্যাথিড্রাল বা চার্চ। পরে ১২০৪ থেকে ১২৬১ সাল পর্যন্ত রোমান ক্যাথলিক চার্চ করা হয়। ১২৬১ খ্রিষ্টাব্দে এটি আবারও ইস্টার্ন অর্থডক্স ক্যাথিড্রালে ফিরে আসে এবং ১৪৫৩ সাল পর্যন্ত অর্থডক্স গির্জা হিসেবেই বহাল ছিল আয়া সোফিয়া।

কিন্তু ঐতিহাসিক যুদ্ধের মাধ্যমে ইস্তাম্বুল বিজয় করেন উসমানি খলিফা সুলতান মুহাম্মদ আল ফাতিহ। পরে অর্থডক্স খ্রিষ্টান যাজকরা আয়া সোফিয়া বিক্রি আবেদন করলে সুলতান ফাতিহ সেটি নিজের অর্থ ব্যয় করে কিনে নেন এবং মসজিদে রুপান্তরিত করেন।

আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুলতান ফাতিহ ইস্তাম্বুল বিজয়ের পরে আয়া সোফিয়া দখল করে নিতে পারতেন। এমনকি রাষ্ট্রীয় টাকা খরচ করেও তিনি আয়া সোফিয়া কিনতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে নিজের ব্যক্তিগত টাকা দিয়ে আয়া সোফিয়া কিনে নেন। যার ঐতিহাসিক চুক্তিনামা এখনো রয়েছে। আর ওই চুক্তিনামার ওপর ভিত্তি করেই তুর্কি আদালত রায় প্রদান করেছেন।

 

টাইমস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
আ.লীগ নেতাকর্মীদের দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর Apr 26, 2024
img
৯ মে পর্যন্ত বন্ধ চুয়েট, খোলা থাকবে হল Apr 26, 2024
img
প্রথমবার এশিয়া কাপে আম্পায়ারিং করবেন বাংলাদেশের জেসি Apr 26, 2024
img
গাজায় ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারে লাগতে পারে ১৪ বছর : জাতিসংঘ Apr 26, 2024
img
বাংলাদেশ-থাইল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী Apr 26, 2024
img
চলমান তাপপ্রবাহ রেকর্ড ভেঙেছে ৭৬ বছরের Apr 26, 2024
img
অলসতা কাটিয়ে সকালে ঘুম থেকে উঠতে করণীয় Apr 26, 2024
img
বাংলাদেশে চিকিৎসা সুবিধায় থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী Apr 26, 2024
img
চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি Apr 26, 2024
img
সেন্সর বোর্ডে আটকে গেল রায়হান রাফীর নতুন সিনেমা ‘অমীমাংসিত’ Apr 26, 2024