ভারতের ১৭ তম লোকসভার মন্ত্রী হিসেবে যারা শপথ নিয়েছেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তি ‘ওড়িশার মোদি’ খ্যাত শ্রী প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি। বৃহস্পতিবার তিনি মোদির মন্ত্রিসভায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং পশুপালন, ডেইরি ও মৎস্য দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
৬৪ বছর বয়সী প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি ভারতের লোকসভা সদস্য হিসেবে ওড়িশার বালেশ্বর থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একদিকে যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছেন, তেমনি সমানতালে সমালোচিত হচ্ছেন তার হিংস্রতার অতীত নিয়ে।
জানা গেছে, অত্যন্ত সাধারণ জীবন-যাপনের জন্য সবার কাছে জনপ্রিয় সারেঙ্গি। সাধারণ গোছের সাদা পাজামা-পাঞ্জাবি পরিধান, কুঁড়েঘরে বসবাস, গ্রামের কূয়ায় গোসল এবং মাথায় উস্কো খুস্কো চুল নিয়ে চলাফেরা করেন তিনি।
সারেঙ্গিকে নিয়ে লোকজনের উন্মাদনার শেষ নেই। সামাজিক মাধ্যমে তার লাখ লাখ ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ শহুরে জীবনের চাকচিক্য, বিলাস, সুবিধা থেকে তিনি অনেক দূরে। বালাসোরের এক ঝুপড়ি বাড়িই তার স্থায়ী ঠিকানা।
দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করলেও একটা সাইকেল ছাড়া তার কোনো বাহন নেই। আর থাকার জায়গা বলতে খড়ে ছাওয়া একটা কুঁড়ে ঘর। আর এসব কারণে খুব সহজেই মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
কিন্তু ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গির গভীর অন্ধকারে ঢাকা হিংস্রতার অতীত রয়েছে। যিনি ১৯৯৯ সালে বজরং দলের রাজ্য ইউনিটের প্রধান ছিলেন।
সেই বছর ২২ জানুয়ারি রাতে কেন্দুঝরের মনোহরপুর গ্রামে দুই নাবালক সন্তানসহ গ্রাহাম স্টেইনস নামের এক অস্ট্রেলিয়ান খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারককে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছে এই উগ্রপন্থী সংগঠনটি।
ওই অঞ্চলে হিন্দুদের জোর করে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগে তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। নিহত শিশু দুটির মধ্যে টিমোথির ছয় ও ফিলিপের বয়স ছিল ১০ বছর। মনোহরপুরে তারা একটি ভ্যানের ভেতর শুয়েছিল।
এছাড়া বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বা ভিএইচপি’রও সদস্য সারেঙ্গি। ২০০২ সালে ওড়িশার বিধানসভায় হামলায়ও তিনি জড়িত ছিলেন। অগ্নিসংযোগ, দাঙ্গা ও সরকারি সম্পদ ধ্বংসের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
হলফনামা অনুসারে, তার বিরুদ্ধে ১০টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে।
বালেশ্বর জেলার নীলগিরি আসন থেকে প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি ২০০৪ ও ২০০৯ সালে দুইবার ওড়িশার বিধানসভা সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
টাইমস/জিএস