পাশাপাশি বাড়িতে বাস যুবক হৃদয় চন্দ্র ঘোষ (২১) ও তরুণী পপি আক্তারের (১৯)। দুজনের ধর্ম আলাদা হলেও এক জায়গায় তাদের মিল। তারা দুজন দুজনকে ভালবাসেন।
কিন্তু দুজন ভিন্নধর্মী হওয়ায় পরিবার তাদের বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। গত মঙ্গলবার প্রেমিকাকে নিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় হৃদয়। বুধবার ওই তরুণীকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসে তার পরিবার। তারপর বৃহস্পতিবার সকালে নিজ বাড়ির সামনের কাঁঠালগাছে হৃদয়ের ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার পৌর শহরের ঘোষপাড়া এলাকায়।
নিহত প্রেমিক হৃদয় চন্দ্র ঘোষ ওই এলাকার অজিত চন্দ্র ঘোষের ছেলে। তিনি পেশায় ট্রাকের হেলপার ছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে প্রতিবেশী ছহুর উদ্দিনের মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে হৃদয়ের। কিন্তু দুজন ভিন্নধর্মী হওয়ায় পরিবার তাদের বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর মেয়েটিকে নিয়ে হৃদয় বাড়ি থেকে পালিয়ে গাজীপুর জেলার মাওনা এলাকায় আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে মেয়ের পরিবারের লোকজন বুধবার রাতে মাওনা এলাকায় হৃদয়ের সঙ্গে দেখা করে মেয়েটিকে নিয়ে ঘোষপাড়া নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘোষপাড়ার বাড়ির সামনে কাঁঠালগাছের সঙ্গে হৃদয়ের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায় ওই ছেলেটির মা রিনা রানী ঘোষ।
বুধবার রাত ১০টার দিকে হৃদয়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয় চাচাতো ভাই গোপাল চন্দ্র ঘোষের। তিনি জানান, ওই সময় হৃদয় জানায়- ‘আমি (হৃদয়) আসতে চাচ্ছি না মেয়ের পরিবারের লোকজন আমাকে জোর করে নিয়ে আসতে চাচ্ছে।’ এতটুকু বলার পরেই হৃদয় লাইন কেটে দেয়। আমাদের ধারণা, প্রতিশোধ নিতেই মেয়ের পরিবার হৃদয়কে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে।
ছেলেকে পাইলে মেরে ফেলবে- এমন হুমকি ওরা (মেয়ের পরিবার) আগে থেকেই দিয়ে আসছিল বলে জানান হৃদয়ের মা রিনা রাণী ঘোষ।
হৃদয়ের প্রেমিকা পপি জানান, তাদের প্রেমের সম্পর্ক ৪-৫ বছর ধরে। এ সম্পর্কের টানেই তিনি হৃদয়ের সঙ্গে পালিয়ে যান। বুধবার রাতে পরিবারের লোকজন যখন তাকে নিয়ে আসে, তখন হৃদয় বলছিল- তাকে (প্রেমিকা) না পেলে হৃদয় আত্মহত্যা করবে। রাতে আমরা যে গাড়িতে বাড়ি ফিরি, হৃদয় সেই গাড়িতে আমাদের সঙ্গে আসেনি।
গৌরীপুর থানার ওসি কামরুল ইসলাম মিয়া বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। অপমৃত্যু মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না।
টাইমস/এইচইউ