ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এত বড় জয় আগে কখনো দেখেনি ক্রিকেট বিশ্ব।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩৪২ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। এক দিনের ক্রিকেটের ইতিহাসে যা সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড।
সাউদাম্পটনের দ্য রোজ বোল-এ টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্তটা না নিলেই হয়তো ভালো করতো দক্ষিণ আফ্রিকা। আগে ব্যাট করতে নেমে রীতিমতো তাণ্ডব শুরু করেন ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা। উদ্বোধনী জুটিতেই ৫৯ রান যোগ করেন দুই ওপেনার জেমি স্মিথ ও ডাকেট।
তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে দারুণ একটি সেঞ্চুরি তুলে নেন জো রুট, আউট হয়েছেন ৯৬ বলে ১০০ রান করে। জ্যাকব বেথেলেও সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। ৮২ বলে ১১০ রানে আউট হন তিনি। শেষদিকে ৩২ বলে ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন জস বাটলার। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪১৪ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় ইংল্যান্ড।
বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাট করতে নেমে কোনো প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারেনি প্রোটিয়ারা। জফরা আর্চারের তাণ্ডবে টিকতেই পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডার। রানের খাতা খোলার আগেই এইডেন মারক্রামকে শিকার করেন আর্চার। এরপর ভিয়ান মুল্ডারের উইকেট তুলে নেন ব্রাইডন কার্স। তিনিও আউট হয়েছেন কোনো রান করেই। ২ রানে দুই উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।
নিজের দ্বিতীয় ওভারেও আঘাত হানেন আর্চার। এবার তার শিকার রায়ান রিকেলটন। পরের ওভারেই তুলে নেন আরেকটি উইকেট। এবার ম্যাথু ব্রিটজকে সাজঘরে ফেরান তিনি। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১০ বলে ৪ রান।
স্টাবস আউট হন ২২ বলে ১০ রান করে, তাকেও শিকার করেন আর্চার। এরপর ডেওয়াল্ড ব্রেভিসকে আউট করেন কার্স। ২৪ রানেই ৬ উইকে হারায় প্রোটিয়ারা।
তারপর ২৫ রানের জুটি গড়েন কেশব মহারাজ ও করবিন বোশ। মহারাজকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন আদিল রশিদ। পরের ওভারেই কোডি ইউসুফকে বোল্ড করেন রশিদ। ৫৭ রানে আট উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। ৩২ বলে ২০ রান করে আউট হন করবিন বোশ। অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ব্যাট করতে পারেননি ইঞ্জুরির জন্য। ফলে মাত্র ৭২ রানেই গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সেইসঙ্গে ৩৪২ রানের বিশাল হারের লজ্জায় ডুবতে হলো প্রোটিয়াদের। ইংলিশদের হয়ে জোফরা আর্চার শিকার করেন ৪ উইকেট, আদিল রশিদ ৩টি এবং ব্রাইডন কার্স নেন ২টি উইকেট।
ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ রানের পরাজয়। এর আগে শ্রীলঙ্কাকে ৩১৭ রানে হারিয়েছিল ভারত। সেটিই ছিল এতদিন সবচেয়ে বড় ব্যবধানের রেকর্ড।
এর আগে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে টি-টোয়েন্টি স্টাইলে খেলতে থাকেন জেমি স্মিথ। অন্য প্রান্তে থাকা ডাকেট অবশ্য একটু ধীরেসুস্থেই ব্যাট করেছেন এ দিন। ৩৩ বলে ৩১ রান করা ডাকেটকে ফিরিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন করবিন বোশ। এরপর স্মিথের সঙ্গে যোগ দেন জো রুট। দুজনে মিলে গড়েন ৪৭ বলে ৫৮ রানের জুটি। ৪৮ বলে ৬২ রান করা স্মিথ আউট হলে ভাঙে এই জুটি।
এরপর বেথেলকে নিয়ে বড় জুটি গড়েন জো রুট। তৃতীয় উইকেট জুটিতে তারা দুজনে মিলে যোগ করেন ১৪৪ বলে ১৮২ রান। মহারাজের বলে পপিং ক্রিজ থেকে বেরিয়ে এসে শট খেলার চেষ্টা করলে তা মিস করেন বেথেল, সঙ্গে সঙ্গে স্টাম্পড আউট করেন রিকেলটন। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে ৮২ বলে ১১০ রান।
২ বলে ৩ রান করা হ্যারি ব্রুক কাটা পড়েন রান আউটে। এরপর করবিন বোশের বলে ক্যাচ তুলে দেন জো রুট। তিনি ফেরেন ৯৬ বলে ১০০ রান করে। শেষদিকে প্রোটিয়া বোলারদের তুলোধুনো করেন জস বাটলার। ৩২ বলে ৬২ রান করে থাকেন অপরাজিত। আরকে প্রান্তে থাকা উইল জ্যাকস অপরাজিত থাকেন ৮ বলে ১৯ রানে। প্রোটিয়াদের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন করবিন বোশ এবং মহারাজ।
পিএ/টিএ