মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলা

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের নামে থাকা একটি ‘ভুয়া’ ফেসবুক আইডির পোস্টকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মধুর ক্যান্টিনের সামনে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতাকর্মীরা।

রোববার বেলা পৌনে একটার এই ঘটনা ঘটে। হামলায় চার নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

আহতরা হলেন- মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান শাওন, গত ডাকসু নির্বাচনে ওই হলের হল সংসদে ছাত্রদলের প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী তারেক হাসান মামুন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা মামুন খান ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওবায়দুল্লাহ নাঈম।

ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা-কর্মীরা বলেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের যে ফেসবুক অ্যাকাউন্টের স্ক্রিনশট ছড়ানো হয়েছে, তা ভুয়া। কারণ তার আইডি হ্যাক হয়েছে। বিষয়টি পরিষ্কার করতে রোববার বেলা সোয়া ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদল। সংবাদ সম্মেলন শেষে মধুর ক্যানটিনে গিয়ে বসেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। সেখানে তখন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একটি সংবাদ সম্মেলন হচ্ছিল।

ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন শেষে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের দিকে তেড়ে যান ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতা-কর্মীরা। তাদের মধ্যে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপসম্পাদক আল মামুন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের কয়েকজন অনুসারী। ক্যানটিনের বাইরে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর রড ও বাঁশ নিয়ে হামলা চালান তারা। ছাত্রদলের দুজন নারী সদস্যকেও লাঞ্ছিত করা হয়। তারা হলেন কানেতা ইয়া লামলাম ও মানসুরা আলম।

হামলার দায় স্বীকার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘তাদের পূর্বসূরিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে আর তারা বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতা-কর্মীরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের সঙ্গে নিয়ে তাদের প্রতিহত করেছি। বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে আমরা কোনো ছাড় দেব না।’

শনিবার ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে থাকা একটি অ্যাকাউন্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।

তবে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, ফেসবুকে আমার ব্যক্তিগত কোনো আইডি নেই। যে একটি আইডি ছিল নেতা হওয়ার পরপরই সেটি হ্যাক হয়ে যায়। এরপর আমার নামে ১০-১২টি ফেক (ভুয়া) আইডি খোলা হয়েছে। এ বিষয়ে গত ৭ অক্টোবর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি। জিডি নাম্বার ২৯০। এছাড়া ফেসবুকে নেতাকর্মীদের অনেকে তখনই স্ট্যাটাস দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছিলেন।

ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অস্থিতিশীল করার জন্য একপক্ষ এই প্রচার করছে। আমাকে বিপদে ফেলতে এবং সংগঠনকে বিতর্কিত করতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে একটি মহল এটি করেছে। তিনি বলেন, প্রতিহিংসার রাজনীতিতে আমি বিশ্বাস করিনা। আমি সুস্থ ধারায় রাজনীতি করতে চাই।

এদিকে দুপুরে মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদলকে মধুর ক্যানটিনে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

 

টাইমস/এসআই

 

Share this news on:

সর্বশেষ