রিয়াল মাদ্রিদের একসময়কার সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল তারকা, ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। তবে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর অন্দরমহলে এখন তার ভবিষ্যৎ ঘিরে তৈরি হয়েছে এক অদ্ভুত অচলাবস্থা। ক্লাব কিংবা খেলোয়াড়—দু’পক্ষই নিজেদের অবস্থানে অনড়। আর সেই অবস্থানেই যেন ভেসে উঠছে বিচ্ছেদের ইঙ্গিত।
খ্যাতনামা সাংবাদিক হোসে পেদ্রেরোল সম্প্রতি ‘এল চিরিংগিতো’ অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, ‘ভিনিসিয়ুস যদি ক্লাবের শর্ত মানে, তবে থাকবে। নাহলে চলে যাবে।’ বোর্ডের পক্ষ থেকে পরিষ্কার বার্তা—অতিরিক্ত দাবি মেনে নেওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। এমনকি ২০২৭ সালের জুনে বিনা মূল্যে তাকে বিদায় জানাতেও আপত্তি নেই রিয়াল মাদ্রিদের।
ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ নেতৃত্বাধীন বোর্ড মনে করছে, ২০১৭ সালে প্রায় ৪৫ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে ভিনিসিয়ুসকে দলে নেওয়ার পর ক্লাব ইতোমধ্যেই যথেষ্ট মূল্য আদায় করে নিয়েছে। সাত মৌসুমে তিনি হয়ে উঠেছেন রিয়ালের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি গোল করা ব্রাজিলিয়ান, পাশাপাশি দুইবারের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে সবচেয়ে কম বয়সে গোল করার রেকর্ডও তার দখলে। আর তাই, আর্থিক দিক থেকে খেলোয়াড়টি অনেকটাই ‘অ্যামর্টাইজড’।
রিয়ালের বর্তমান প্রেক্ষাপটে কিলিয়ান এমবাপ্পে ক্রমেই হয়ে উঠছেন প্রধান তারকা। ভিনিসিয়ুস ও তার প্রতিনিধিরা দাবি করছেন ফরাসি তারকার সমপরিমাণ বেতন, কিন্তু সে পথে হাঁটার কোনো ইঙ্গিত নেই মাদ্রিদের বোর্ডে। অর্থাৎ, এখানেই মূল দ্বন্দ্ব।
সম্প্রতি ভিনিসিয়ুসের এজেন্টদের সঙ্গে ক্লাবের সিইও হোসে অ্যাঞ্জেল সানচেজের বৈঠক হয়েছে ভ্যালদেবেবাসে। তবে আলোচনায় নতুন কোনো অগ্রগতি নেই। এক বছরের কিছু বেশি সময় পরেই (২০২৭ সালের মাঝামাঝি) ফ্রি এজেন্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকলেও ক্লাবের অবস্থান অপরিবর্তিত।
অন্যদিকে খেলোয়াড়ের শিবিরে বাড়ছে হতাশা। কোচ জাবি আলোনসোর অধীনে ভিনিসিয়ুসের মাঠে ভূমিকা অনেকটাই কমে গেছে। শুধুই কৌশলগত সিদ্ধান্ত, নাকি এর পেছনে আরও কিছু আছে—সেটিই জানতে চাইছে ভিনিসিয়ুসের দল।
রিয়াল জানিয়ে দিয়েছে, কোনো প্রস্তাব এলে সেটি শুধুমাত্র ১ বিলিয়ন ইউরোর বাইআউট ক্লজ মেনেই হতে হবে। তবে খেলোয়াড় যদি অপেক্ষা করেন এবং চুক্তির মেয়াদ ফুরিয়ে ফেলে ফ্রি ট্রান্সফারে চলে যান, তবুও আপত্তি থাকবে না বোর্ডের।
ভিনিসিয়ুস কি শেষ পর্যন্ত রিয়ালের সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখবেন, নাকি এমবাপ্পের উত্থানের ছায়ায় সরে যাবেন অন্য কোনো মঞ্চে? ইউরোপিয়ান ফুটবলের অন্যতম আলোচিত এই কাহিনির পরবর্তী অধ্যায় এখন গোটা বিশ্ব অপেক্ষা করে দেখছে।
এবি/টিএ