শারদীয় দুর্গোৎসবের মহানবমী উপলক্ষে গতকাল (১ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। ঢাকের বাজনা ও মন্ত্রপাঠের সঙ্গে সঙ্গে ভক্তরা অঞ্জলি দিয়েছেন আনন্দময়ী দেবীর চরণে।
নবমী পূজা ও সন্ধ্যা আরতির মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বিদায়ের সুর। আজ বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে দেবী দুর্গার বিদায় ঘটবে।
পাঁচ দিনের দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটবে আজকের বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। নিরাপত্তা বিবেচনায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সন্ধ্যার আগেই প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।
হিন্দু শাস্ত্রমতে, মহানবমীতে রাবণ বধের পর রাজা শ্রী রামচন্দ্র এই পূজা করেন। নীলকণ্ঠ ফুল ও যজ্ঞের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয় নবমী বিহিত পূজা। শাপলা, শালুক ও বলিদানের মাধ্যমে দশভুজা দেবী দুর্গার পূজা করা হয় এই দিনে। নীল অপরাজিতা ফুলও মহানবমীর পূজায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যজ্ঞে ১০৮টি বেলপাতা, আম কাঠ ও ঘি দিয়ে দেবীর কাছে আহুতি দেওয়া হয়।
রাজধানীর বিভিন্ন মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের পাশাপাশি উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপন করছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। সকাল থেকেই মণ্ডপে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে, যা বিকেলের দিকে আরও ঘন হয়। নতুন পোশাকে শিশুদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। আজ সকালে অনুষ্ঠিত হবে বিজয়া দশমীর পূজা।
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের পুরোহিত বরুণ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, বিজয়া দশমীতে বিহিত পূজা ও দর্পণ বিসর্জনের মাধ্যমে দুর্গাপূজার শাস্ত্রীয় সমাপ্তি ঘটবে। দশমী পূজায় প্রতিমার হাতে জরা, পান, শাপলা ও ডালা দিয়ে দেবীকে আরাধনা করা হয়।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর জানান, দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় আজ প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে। এর আগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হবে, যা রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সদরঘাটে গিয়ে শেষ হবে।
বিজয়া দশমী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতারা হিন্দু সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
আজ দুর্গোৎসব উপলক্ষে সারাদেশে সরকারি ছুটি পালন করা হচ্ছে। গতকালও ছিল সাধারণ ছুটি। ফলে এবার সরকারি চাকরিজীবীরা টানা চার দিনের ছুটি উপভোগ করছেন।
এমকে/এসএন