দীর্ঘ দুই শতাব্দীর ইতিহাস বহন করা নাইজেরিয়ার কোয়ারা রাজ্যের ইলোরিন শহরের ঐতিহ্যবাহী গাম্বারি মসজিদ আধুনিক সংস্কার ও সম্প্রসারণ শেষে পুনরায় উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রাচীনতম ইসলামিক শিক্ষা কেন্দ্রগুলোর একটি হিসেবে পরিচিত এই মসজিদটি ১৮০৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো এত ব্যাপক সংস্কারের মধ্য দিয়ে গেল—যা স্থানীয় জনগণ ও গবেষকদের কাছে এক ঐতিহাসিক পুনর্জাগরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সংস্কার কাজের মাধ্যমে মসজিদটিতে যুক্ত হয়েছে একটি আধুনিক গ্রন্থাগার, উন্নত সুবিধা এবং আরও বেশি সংখ্যক উপাসককে ধারণ করার মতো সম্প্রসারিত প্রার্থনাকক্ষ। স্থাপত্য বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরো পুনর্গঠন প্রকল্পটি মসজিদের প্রাচীন নকশা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রেখে আধুনিক সুবিধার সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয়েছে—যা ঐতিহ্য ও আধুনিকতার এক সুন্দর ভারসাম্য।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কোয়ারা ও বোর্নো রাজ্যের গভর্নর, ইলোরিনের মেয়র, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা মন্ত্রীসহ ধর্মীয় ও সামাজিক নেতারা।
পুনর্গঠন কমিটির প্রধান ইদ্রিস আবদুল্লাহ হারুন এই পুনরুজ্জীবনকে ‘ঈমান-আকিদা, ঐক্য ও আলোকিতকরণের প্রতীক’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটি কেবল একটি ভবন পুনর্নির্মাণ নয়, বরং ইলোরিনের ধর্মীয় ইতিহাসের প্রতি মানুষের গভীর ভালোবাসার প্রকাশ। ইতিহাসবিদরা জানান, দুই শতাব্দীরও বেশি আগে গাম্বারি পরিবারের হাত ধরে মসজিদটির নির্মাণ শুরু হয়। তাদের উত্তরসূরিরাও প্রজন্ম ধরে এর পরিচর্যা, সংরক্ষণ ও নতুন সংস্কার কাজে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ২০১৮ সালে সরকার অনুমোদন দেওয়ার পর স্থানীয় মুসলিম জনতা ও বিভিন্ন দাতাদের সহযোগিতায় আনুষ্ঠানিকভাবে সংস্কার কাজ শুরম্ন হয়।
ইলোরিনের ইমাম শেখ মোহাম্মদ বশির সালিহু তার বক্তব্যে কোয়ারা ও বোর্নো রাজ্যের দীর্ঘস্থায়ী সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বন্ধনের প্রশংসা করেন। তার মতে, ইমাম গাম্বারি মসজিদের এই পুনঃউদ্বোধন শুধু একটি ঐতিহাসিক নিদর্শনকেই নতুন জীবন দেয়নি, বরং ইলোরিনের ইসলামিক শিক্ষা ও সামাজিক ভূমিকাকে আরও শক্তিশালী করেছে।
এই পুনরুদ্ধার প্রকল্পটি ইলোরিন শহরের জন্য যেমন গৌরবের, তেমনি নাইজেরিয়ার ইসলামিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।
ইউটি/টিএ