নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির প্রশাসনে কাজের আগ্রহীদের জন্য চালু করা অনলাইন পোর্টালে দুই দিনের মধ্যে ৭০ হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। সোমবার (২৪ নভেম্বর) তার টিম এ তথ্য জানিয়েছে।
তবে এখনো জানানো হয়নি কতটি পদে, কোন বিভাগে এবং কতজনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, নিউইয়র্ক সিটিতে স্থায়ী সরকারি চাকরির প্রধান পথ এই পোর্টাল নয়, ঐতিহ্যগত সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিটির ১০০টিরও বেশি সংস্থা ও বিভাগে বর্তমানে হাজার হাজার শূন্য পদ রয়েছে। জনপ্রিয় পদগুলোর মধ্যে রয়েছে—ক্লারিক্যাল, কম্পিউটার, পুলিশ, ট্রাফিক এনফোর্সমেন্টসহ বিভিন্ন কাজ। এসব পদে নিয়োগ পেতে আবেদনকারীদের লিখিত পরীক্ষা, শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা যাচাই, মেধার ভিত্তিতে তালিকাভুক্তি, পরে “১-এবং-৩” নিয়মে সাক্ষাৎকারসহ বহু ধাপ অতিক্রম করতে হয়। পুরো প্রক্রিয়ায় সময় লাগতে পারে কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর।
যারা সরাসরি সিটি হলে কাজ করতে চান, তাদের জন্য নবনির্বাচিত মেয়রের পোর্টালটি কার্যকর হতে পারে। তবে এসব পদ সীমিত এবং সাধারণত রাজনৈতিকভাবে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা, প্রচার টিমের সদস্যরা বা ইউনিয়ন সংশ্লিষ্টরা অগ্রাধিকার পান। সিটি হলের অধিকাংশ পদ প্রশাসন পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে নিয়োগ করা হয়।
চাকরি–বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন—শুধু পোর্টালে আবেদন করলেই হবে না; সিটি হলে এবং সিভিল সার্ভিস উভয় পথে আবেদন করা উচিত।
সরকারি নিয়োগ তদারকি করে ডিপার্টমেন্ট অব সিটিওয়াইড অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসেস (DCAS)। ১৮৮৩ সাল থেকে চালু এই ব্যবস্থা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নিয়োগ নিশ্চিত করে। প্রতি বছর DCAS প্রায় ১০০টি ওপেন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা নেয়—যার মধ্যে পুলিশ অফিসার, ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট এজেন্ট, কম্পিউটার অ্যাসোসিয়েট, স্টক ওয়ার্কার ও স্টাফ অ্যানালিস্ট উল্লেখযোগ্য।
পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা চার বছর পর্যন্ত মেধাতালিকায় থাকেন। নিয়োগকারী সংস্থা তালিকার শীর্ষ তিন জনের অন্তত একজনকে সাক্ষাৎকারে ডাকতেই হবে—এটিই ‘১-এবং-৩’ নিয়ম।
নিয়মিত শূন্যতা তৈরি হয় পুলিশ অফিসার, কারেকশন অফিসার, ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট এজেন্ট, কম্পিউটার অ্যাসোসিয়েট, পাবলিক হেলথ নার্স ও বিভিন্ন ক্লারিক্যাল পদের ক্ষেত্রে। এছাড়া বিশেষ ডিগ্রি বা অভিজ্ঞতা প্রয়োজন এমন পদের মধ্যে রয়েছে স্থপতি, ইমার্জেন্সি মেডিক্যাল স্পেশালিস্ট ও প্রোকিউরমেন্ট অ্যানালিস্ট।
প্রতিটি পদের জন্য DCAS ‘নোটিশ অব এক্সামিনেশন’ (NOE) প্রকাশ করে, যেখানে উল্লেখ থাকে বেতন, যোগ্যতা, আবেদন ফি ও আবেদন প্রক্রিয়া। অনেক পরীক্ষার চক্র ৩–৪ বছর পরপর আসে, আর ফল প্রকাশ ও তালিকা যাচাই করতে দীর্ঘ সময় লাগে।
DCAS–এর ওয়েবসাইটে নিয়মিত খালি পদের তালিকা হালনাগাদ করা হয়। পাশাপাশি সিটি এজেন্সিগুলো প্রভিশনাল কর্মী নিয়োগ দিতে পারে, যারা স্থায়ী নন, পরে পরীক্ষা হলে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ থাকলেও তা প্রায়ই দীর্ঘ সময় বিলম্বিত হয়।
ইএ/টিকে