পোপ লিও বৃহস্পতিবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠকের পর দেশটিকে বিভিন্ন জাতির মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তার ভূমিকা আরো দৃঢ়ভাবে গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এটি তার পোপ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম বিদেশ সফর।
চার দিনের সফরের শুরুতে রাজধানী আংকারায় কর্মকর্তাদের ও কূটনীতিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মিস্টার প্রেসিডেন্ট, তুরস্ক যেন জাতিগুলোর মধ্যে স্থিতিশীলতা ও ঘনিষ্ঠতার উৎস হয়ে ওঠে-ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তির সেবায়।’
তিনি বলেন, ‘আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আমাদের এমন মানুষের প্রয়োজন, যারা সংলাপকে এগিয়ে নেবে এবং দৃঢ় ইচ্ছা ও ধৈর্যের সঙ্গে তা অনুশীলন করবে,’ একই সঙ্গে তিনি বৈশ্বিক পর্যায়ে ‘সংঘাতের তীব্রতা বৃদ্ধির’ বিষয়ে সতর্ক করেন।
ইউক্রেন সংঘাত থেকে শুরু করে গাজা যুদ্ধ, আফ্রিকার হর্ন অঞ্চলসহ নানা সংকটে তুরস্ক নিয়মিতভাবে সংঘাত নিরসনের প্রচেষ্টায় অংশ নিচ্ছে এবং ক্রমশই প্রধান পশ্চিমা শক্তিগুলোর পাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছে।
পোপ লিও বলেন, পূর্ব ও পশ্চিম, এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সেতুবন্ধ হিসেবে তুরস্কের একটি ‘বিশেষ ভূমিকা’ রয়েছে, তবে দেশটি একই সঙ্গে ‘সংবেদনশীলতার এক মিলনস্থল’, যা তার অভ্যন্তরীণ বৈচিত্র্যের কারণে আরো সমৃদ্ধ।
তিনি বলেন, ‘ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল এবং সমগ্র বিশ্বের বর্তমান ও ভবিষ্যতে আপনার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে-বিশেষ করে আপনার অভ্যন্তরীণ বৈচিত্র্যকে মূল্য দেওয়ার মাধ্যমে।’ তিনি এমন এক দেশে এ কথা বলেন, যেখানে আট কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় এক লাখ খ্রিস্টান রয়েছে, আর অধিকাংশ মানুষ সুন্নি মুসলমান।
তিনি বলেন, ‘একজাতীয়তা মানেই দারিদ্র্য। প্রকৃতপক্ষে, একটি সমাজ তখনই প্রাণবন্ত থাকে, যখন সেখানে বহুত্ব থাকে।’
তিনি আরো বলেন, ‘খ্রিস্টানরা আপনার দেশের ঐক্যে ইতিবাচকভাবে অবদান রাখতে চায়। তারা তুর্কি পরিচয়ের অংশ - এবং নিজেদের তেমনই মনে করে।’
বিশ্বের ক্যাথলিকদের এই নেতা বলেন, তুরস্কের মতো এমন এক সমাজে, যেখানে ধর্ম দৃশ্যমান ভূমিকা পালন করে, সেখানে সবার ‘মর্যাদা ও স্বাধীনতা’ রক্ষা করা ‘অত্যাবশ্যক’।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই ঈশ্বরের সন্তান এবং এর ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক তাৎপর্য রয়েছে।’
তিনি যোগ করেন, ‘আজ এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ, যা স্থানীয় নীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক-উভয়কেই নতুনভাবে গড়ে তুলতে হবে।’
টিকে/