ভারতের কলকাতায় বাবরি মসজিদের আদলে একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগকে কেন্দ্র করে সেখানে রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্ক প্রবল হয়ে উঠেছে। বলা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের আগেই ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি প্রকাশ্যে এলো।
৬ ডিসেম্বর ভাঙা হয়েছিল ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ। ৩৩ বছর ধরে চলমান সেই বিতর্কের আগুনে নতুন সংযোজন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের বাবরি মসজিদের আদলে একটি মসজিদ নির্মাণের প্রস্তুতি।
শনিবার (৬ ডিসেম্র) সেই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে রাজ্যের প্রায় সব জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক মুসলিম সমবেত হন। অনেকের হাতে সেই ভিত্তিপ্রস্তর তৈরির জন্য ইট দেখা গেছে। এমনকি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তৃণমূল-বিজেপিকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দল থেকে বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীর।
তৃণমূল এই দিনটিকে সংহতি দিবস হিসাবে উদযাপন করেছে। কলকাতার মেয়োরোডে আয়োজিত সভায় এদিন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম নাম না করে বাবরি মসজিদের আদলে মসজিদ নির্মাণ করায় হুমায়ুনের সমালোচনা করেন।
কলকাতা পৌরসভা মেয়র বলেন, মানুষের মধ্যে যে ভরসা ছিল সেই ভারতবর্ষ আমার, সেই ভরসা ভেঙে দিয়ে মানুষের বিশ্বাসের ওপর আঘাত সৃষ্টি করেছে বিজেপি। থেমে থাকেনি বিজেপিও। তৃণমূলকে খোঁচা দিয়ে মন্তব্য করেছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও। পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বলেন, বাবরের নাম নিয়ে আমাদের আপত্তি আছে। আজকে প্রমাণ হয়ে গেল মমতা বন্দোপাধ্যায় কত বড় হিন্দুবিরোধী। কতবড় ভারতীয় সংস্কৃতিবিরোধী।
তৃণমূল কংগ্রেস দিঘায় এর আগে জগন্নাথ মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছে, নিউ টাউনে দুর্গা মন্দির করার কথা রয়েছে। উত্তরবঙ্গেও বেশ কয়েকটি মন্দির তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের আগে প্রধান দুটি দলের প্রধান এজেন্ডা ধর্মকে কেন্দ্র করে ভোটরদের নিজ দলে ভেড়ানো। আর সেই এজেন্ডায় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মতো করে প্রচার-প্রচারণা, মন্দির-মসজিদ নির্মাণ করে চলেছে। তবে শেষ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যবাসী ধর্মীয় মেরুকরণের ভাগ হন কিনা, সেটা বোঝা যাবে বিধানসভার ফল প্রকাশের পর।
এসএস/টিকে