চাঁদপুরের মতলব উত্তরে কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. হোসেন মিয়া হঠাৎ করেই রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। গত রোববার (৭ ডিসেম্বর), তিনি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও পোস্ট করেন যেখানে তাকে দুধ ঢেলে গোসল করতে দেখা যায়। এই ভিডিও এবং তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয় রাজনীতিতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
হোসেন মিয়া রাজনীতি ছাড়ার কারণ হিসেবে তীব্র হতাশা, বঞ্চনা এবং ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরেছেন। ভিডিওর সঙ্গে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন যে, তিনি ধ্বংস হননি, বরং তাকে ধ্বংস করা হয়েছে 'টাকা আর ষড়যন্ত্র' নামক ব্যবস্থার মাধ্যমে। তিনি আক্ষেপ করে লিখেছেন যে, আজ তিনি সবার কাছে হাসির পাত্র।
তার অভিযোগের তীর মূলত তার কাছের মানুষজন এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও দোসরদের দিকে। তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির উভয়ের 'দোসররা' মিলেমিশে, টাকার ও ক্ষমতার জোরে ষড়যন্ত্র করে তার মতো একজন ক্ষুদ্র কর্মীকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিয়েছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন যে, তার লড়াইটা যদি বিএনপি, যুবদল এবং স্থানীয় মনোনীত প্রার্থীর (জালাল সাহেব) জন্য হয়ে থাকে, তবে কেন এই পরিণতি? শেষ পর্যন্ত তিনি সকল প্রকার রাজনীতি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন বলে জানান।
হোসেন মিয়ার এই নাটকীয় ঘোষণার পর স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
কলাকান্দা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক যৌথ বিবৃতিতে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা বলেন যে, হোসেনের ওপর গ্রাম্য সালিশে যে অপমানজনক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা শুধু তার প্রতি নয়, বরং সংগঠনের মর্যাদা ও আত্মসম্মানের ওপরও আঘাত। তারা এই অপমানজনক রায় প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রাশেদ জামান টিপু ঘটনাটিকে দুঃখজনক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি মনে করেন, রাজনীতি আদর্শের জায়গা এবং ব্যক্তিগত হতাশার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। তিনি উল্লেখ করেন যে, ভুল বোঝাবুঝি বা অভিমান থাকলে সাংগঠনিক আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান করা যেত এবং তিনি হোসেন মিয়াকে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে অনেকে তার প্রতি সহানুভূতি দেখালেও, কেউ কেউ ঘটনাটিকে অতিরঞ্জন হিসেবে দেখছেন।
এমকে/টিকে