ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে বর্তমান পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের দ্রুত অপসারণ দাবি করেছে তার পরিবার ও অনুসারীরা।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) শাহবাগ মোড়ে ‘শহীদ পিন্টু স্মৃতি পরিষদ’ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় এ দাবি জানানো হয়। বক্তাদের অভিযোগ, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় পিন্টুকে ফাঁসানোর পেছনে অন্যতম ভূমিকা ছিল বর্তমান পুলিশ প্রধানের।
শহীদ পিন্টু স্মৃতি পরিষদের সভাপতি রফিক আহমেদ ডলার বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আইজিপি বাহারুলকে অপসারণ করে বিচারের মুখোমুখি না করা হলে কঠোর আন্দোলন চলবে।
নব্বইয়ের দশকের তুখোড় ছাত্রনেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু। রাজপথের লড়াকু সৈনিক হিসেবে পরিচিত বিএনপির সাবেক এই এমপির উপস্থিতি সরকারবিরোধী আন্দোলনে যোগ করতো ভিন্নমাত্রা। যার সাংগঠনিক দক্ষতায় সবসময় তটস্থ থাকতো তৎকালীন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ।
২০০৯ সালের পিলখানা হত্যা মামলায় ২০১৩ সালে পিন্টুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। এরপর ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঢাকা থেকে রাজশাহী কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। পরিবারের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, সেখানে অসুস্থ হওয়ার পর ন্যূনতম চিকিৎসা না দিয়েই তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়। ৩ মে কারাগারেই মারা যান তিনি।
মৃত্যুর প্রায় ১০ বছর পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত 'জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন'-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বর্তমান আইজিপি বাহারুল আলমের নাম। কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিরোধীদের ফাঁসানো এবং প্রকৃত অপরাধী শনাক্ত না করেই বিরোধী দলীয় কর্মীদের ওপর দায় চাপানোর প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন তৎকালীন এসবি কর্মকর্তা ও বর্তমান পুলিশ প্রধান।
এই প্রতিবেদনের জের ধরেই মঙ্গলবার শাহবাগ মোড়ে প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার হাতে জড়ো হন পিন্টুর অনুসারীরা। 'শহীদ পিন্টু স্মৃতি পরিষদ'-এর ব্যানারে আয়োজিত এই প্রতিবাদ সমাবেশের মূল দাবি ছিল—অবিলম্বে আইজিপি বাহারুল আলমের অপসারণ ও গ্রেপ্তার। সমাবেশে পিন্টু সমর্থকদের অভিযোগ, নাসিরউদ্দিন পিন্টুর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়েই তাকে পরিকল্পিতভাবে পিলখানা মামলায় ফাঁসিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।
সমাবেশে বক্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যে ব্যক্তি একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের নীল নকশার সাথে জড়িত ব্যাক্তিকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা মানেই হলো ন্যায়বিচারকে উপহাস করা। এতে প্রশাসনের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে মনে করেন তারা।
ইএ/এসএন