কোনো নীতিমালা না থাকলেও ‘পরিবেশবান্ধব’ দাবিতে রাজধানীতে তৈরি হচ্ছে কাঁচে ঘেরা একের পর এক সুউচ্চ ভবন। যদিও এসব ভবনকে বাংলাদেশের পরিবেশ উপযোগী পরিবেশবান্ধব বলতে নারাজ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- রাজউক। কারণ, এসব ভবনে প্রাকৃতিক হাওয়া-বাতাস প্রবেশের কোনো সুযোগ থাকে না।
তবে প্রকৃত পরিবেশবান্ধব ভবনকে অন্যান্যদের চাইতে ছেড়ে দেয়া জায়গা অনুপাতে উপরের দিকে শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ হারে বর্ধিত তলা নির্মাণের জন্য বিশেষ সুবিধা দিতে চায় রাজধানীতে ভবনের নকশা অনুমোদনকারী প্রতিষ্ঠানটি। এজন্য, আন্তর্জাতিক বিধির সাথে সমন্বয় করে দেশের পরিবেশের সাথে খাপ খায় এমন নীতিমালা সহসাই প্রণয়ন করা হবে জানিয়েছে রাজউক।
পশ্চিমা বিশ্ব বা শীত প্রধান দেশের মতোই নাতিশীতোষ্ণ বাংলাদেশেও তৈরি হচ্ছে কাঁচে ঘেরা এমন উঁচু ভবন। বাহির থেকে এসব ভবনে বাতাস প্রবেশের সুযোগ নেই বললেই চলে। স্বাভাবিক তাপমাত্রার জন্য নির্ভর করতে হয় শীততাপ নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্রের ওপর।
তবে এসব ভবনে পরিবেশ নষ্ট করে তৈরি পোড়া ইট ব্যবহার হয় না। এর পরিবর্তে দেয়াল তৈরি হয় টেকসই কাঁচে। আবাসন ব্যবসায়ী ও সট সাউথ ব্রিজ হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুর রহমান খান বলেন, বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে সূর্যের আলো প্রবেশ করে কাঁচ দিয়ে, আর হাওয়া-বাতাস তৈরির জন্যও নেয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা। ভবনে ব্যবহার করা অন্যান্য উপাদানও থাকে পরিবেশবান্ধব।
তবে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউক বলছে, আন্তর্জাতিক সংস্থার নীতি অনুসরণ করে তৈরি এই ভবনগুলো বাংলাদেশ উপযোগী পরিবেশবান্ধব নয়। যদিও তারা আপাতত এটি আমলে নিচ্ছেন। তবে শিগগিরই একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম।
স্থপতি আহমেদ ইমতিয়াজ খান বলছেন, দেশে কোনো নীতিমালা না থাকায় তারা আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করছেন। আর আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব বলছে, পরিবশেবান্ধব ভবন অনেকটাই খোলামেলা পরিবেশে তৈরি, যা বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং পানি সাশ্রয়ী। নির্মাণে খরচ কিছু বেশি হলেও পরিবেশবান্ধব এসব ভবনের দীর্ঘমেয়াদি রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম এবং কার্বন নিঃসরণ করে না বললেই চলে।
আরপি/এসএন