যশোরে বাড়ছে মাথা ন্যাড়া করার প্রবণতা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে দীর্ঘ ছুটির কবলে দেশ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অধিকাংশ অফিসই বন্ধ রয়েছে। সারা দেশের নাগরিকদের হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। তাই অনেকেই আছেন স্বেচ্ছা গৃহবন্দি অবস্থায়।

দীর্ঘ এই ছুটিতে অধিকাংশ মানুষ বাসায় অবস্থান করায় তারা পরিবারকে সময় দিচ্ছেন। আবার অনেকেই জমে থাকা ঘরের কাজ এই সুযোগে শেষ করছেন। তবে ব্যতিক্রমী এক চিত্র দেখা যাচ্ছে যশোরে। যশোরে হঠাৎ করেই বেড়েছে টাক মাথার মানুষ। রাস্তাঘাটে দেখা না গেলেও প্রতিদিন অনেক মানুষ ন্যাড়া করে মুন্ডানো মাথার ছবি দিচ্ছেন ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

এ ব্যাপারটি সারা দেশেই আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ করোনাভাইরাস বাংলাদেশে প্রবেশের পর এরই মধ্যে পরপর বেশকিছু গুজব চাউর হয়েছিল। তাই ন্যাড়া করার পেছনে করোনাভাইরাস কেন্দ্রিক কোনো নতুন গুজব আছে কিনা তা নিয়েও অনেকে ভাবছেন। কিন্তু যশোরের বেশ কয়েকজন মাথা ন্যাড়া করা ব্যক্তি জানিয়েছেন, মাথা ন্যাড়া (টাক) করার সঙ্গে করোনাভাইরাসের কোনো সম্পর্ক নেই।

মাথা ন্যাড়া করা কয়েকজন আরও জানান, করোনাভাইরাসের কারণে এখন সবাইকে স্বেচ্ছা গৃহবন্দি থাকতে হচ্ছে। কত দিন পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তার নিশ্চয়তা নেই। এ দীর্ঘ সময় কর্মস্থলে যাওয়ারও সুযোগ নেই। বাড়ির বাইরে বের হওয়ারও তেমন প্রয়োজন পড়ছে না। কাজেই এই সময়টা মাথা টাক করার উপযুক্ত সময়। কারণ এই সময় মাথা টাক করলে মানুষের ঠাট্টা-বিদ্রূপের সম্ভাবনা নেই। কারণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত চুল আবার গজিয়ে যাবে।

যশোর সদর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের জহির ইকবাল নামে মাথা ন্যাড়া করা এক ব্যক্তি বলেন, মাথার চুল সব পড়ে যাচ্ছে। শুনেছি মাথা ন্যাড়া করলে চুল পড়া কমে যায়। তাই চুল পড়া রোধে মাথা ন্যাড়া করেছি। করোনাভাইরাসের কারণে বাড়িতেই থাকছি, এই সুযোগে মাথা ন্যাড়া করেছি।

যশোর শহরের খোলাডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা মাহবুব উল্লাহ নামে এক স্কুলশিক্ষক বলেন, চুল বড় হয়ে যাওয়ায় মাথা ঘেমে থাকত। গরমের দিন আসছে। তাই এই সময় মাথা ন্যাড়া করা ভালো। এছাড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সব সেলুন বন্ধ রয়েছে। তাই মাথা ন্যাড়া করে বাড়িতে বসে থাকলেও সমস্যা নেই। বাইরে তো আর যেতে হচ্ছে না।

মাথা ন্যাড়া করার ব্যাপারে যশোর শহরের চারখাম্বা মোড়ের সীমা হেয়ার কাটিং সেলুনের মালিক নিরঞ্জন রায় বলেন, বাড়ি গিয়ে চুল কাটানোর জন্য অনেকেই ফোন করছেন। কিন্তু এভাবে তো আর সবার বাসায় গিয়ে গিয়ে চুল কাটানো সম্ভব নয়। সেলুন বন্ধ, তাই সুবিধামত কিছু কিছু বাসায় গিয়ে কাজ করে আসছি। গরমের কারণে অনেকেই মাথা ন্যাড়া করছেন। আবার লম্বা ছুটি পাওয়ায় অনেকেই বাড়ির বাইরে যাচ্ছেন না। তারাও এই সুযোগে মাথা ন্যাড়া করছেন।

 

টাইমস/এসএন/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ