হরিণাকুন্ডুতে ত্রাণের টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে মামলা

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু পৌরসভার প্যানেল মেয়র খায়রুর ইসলামকে মারধর করে ত্রাণের টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সাইফুল ইসলাম ওরফে টিপু মল্লিকসহ ‍দুইজনের নাম উল্লেখসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে হরিণাকুন্ডু থানায় মামলা হয়েছে। হরিনাকুন্ডু পৌরসভার মেয়র শাহিনুর রহমান রিন্টু বাদি হয়ে এ মামলা করেন। এছাড়া অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীর। শুক্রবার হরিণাকুন্ডু থানার ওসি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

হরিণাকুন্ডু পৌর মেয়র শাহিনুর রহমান রিন্টু জানান, অসহায় ও দুস্থদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের জন্য পৌরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে পৌর এলাকার ১৬শ অসহায় দুস্থ মানুষের তালিকা ও ত্রাণ বিতরণের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বরাদ্দকৃত এ টাকা উত্তোলনের জন্য কমিটির প্রধান ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়। খায়রুল ইসলাম বৃহস্পতিবার স্থানীয় সোনালী ব্যাংক থেকে ওই টাকা উত্তোলন করেন।

পৌর মেয়র শাহিনুর রহমান রিন্টু অভিযোগ করে বলেন, ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা সব টাকা প্যানেল মেয়র খায়রুল ইসলামের কাছেই ছিল। এরই মধ্যে পৌরসভার পক্ষ থেকে দুস্থদের মাঝে বিতরণের জন্য বাকিতে ৭০ বস্তা চাল, ২৯০ কেজি ডাল এবং ১৬ টাকা কেজি দরে আলু কেনা হয়। প্যানেল মেয়রের কাছে থাকা ওই টাকা দিয়ে ক্রয় করা মালামালের মুল্য পরিশোধ করার কথা ছিল।

কিন্তু পূর্ব শত্রুতার জেরে স্থানীয় পার্বতীপুর বাজারে প্যানেল মেয়রের গুদামে হামলা চালিয়ে তাকে মারধর করে তার কাছে থাকা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় সাইফুল ইসলাম ওরফে টিপু মল্লিক।

পরে আহত অবস্থায় প্যানেল মেয়রকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে হরিণাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদিকে শুক্রবার এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পৌর কমিশনার ও পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

এঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শুক্রবার সকালে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পৌরসভার সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে।

এদিকে প্যানেল মেয়রকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম ওরফে টিপু মল্লিকের বিরুদ্ধে বেশকিছু গুরুত্বর অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগের একটি সুত্র জানায়, বিগত ৩ মাস গণপূর্তের নির্বার্হী প্রকৌশলী কায়সার ইবনে সাঈখকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে টিপু মল্লিকের বিরুদ্ধে থানায় জিডি হয়।


এছাড়া পেশাদার ঠিকাদার হওয়ার পরেও নাম পরিবর্তন করে ঝিনাইদহ মল্লিক শহীদুল ইসলাম কারিগরি কলেজে বিগত ১৫ বছর ধরে তিনি প্রভাষক হিসেবে কাজ করেছেন। কলেজের একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ না নিলেও তিনি নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলন করেছেন। ব্যাপারটি জানাজানি হওয়ার পর তিনি প্রভাষকের চাকরি ছেড়ে দেন। কিন্তু অবৈধ ভাবে উত্তোলন করা সরকারি অর্থ তিনি এখন পর্যন্ত ফেরত দেননি। ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পৌর প্যানেল মেয়রের কাছ থেকে টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ অস্বীকার করে সাইফুল ইসলাম ওরফে টিপু মল্লিক বলেন, প্যানেল মেয়র আমার চাচাতো বোনের ছেলে। মামা হিসেবে তাকে দু-একটি চড়থাপ্পড় মারতেই পারি।

তিনি আরও বলেন, পৌরসভার ত্রাণ বিতরণের বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়েছে। মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আগামীতে আমি হরিনাকুন্ডু পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক, এজন্য তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়েছে।

 

টাইমস/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ