কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছেন, মাস্ক ক্রয়জনিত বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নাম জড়িয়ে যে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে তা অসত্য, বিভ্রান্ত ও বানোয়াট।
তিনি আরও জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতিতে সেবাদানকারী চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও সংশ্লিষ্টদের জন্য সর্বমোট ১৪ লাখ ৬৭ হাজার পিপিই ক্রয় করেছে সরকার। এতে আনুমানিক ১৭৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া এসব পিপিই বিতরণে প্রায় সাত থেকে আট কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। এই পিপিই গুলো দেশের প্রতিটি পিসিআর ল্যাব ও মাঠপর্যায়ে করোনার নমুনা শনাক্তকরণ কাজে নিয়োজিত কর্মীদের জন্য পাঠানো হবে বলেও তিনি জানান।
সোমবার দুপুরে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রাত্যহিক অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এসব কথা বলেন তিনি।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষে ক্রয়কৃত কোনো পণ্য সরবরাহ করার পর যদি তার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদক প্রতিষ্ঠানে তা ফেরত পাঠানো হয়। এছাড়া সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থাও নেয়া হয়। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে দেশীয় কোনো এক কোম্পানির সরবরাহকৃত মাস্ক নিয়ে বিভ্রান্তিকর, বানোয়াট এবং অসত্য তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। আর দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এসব সংবাদের সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে জড়ানো হয়েছে।
ব্রিগেডিয়ার শহীদুল্লাহ বলেন, এ ধরণের সংবাদ পরিবেশন না করার আহ্বান জানিয়ে এর আগেই আমরা বিভিন্ন সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমে প্রেস রিলিজ দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এধরণের অসত্য সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। অসত্য তথ্য যদি কেউ প্রচার করে, তাহলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।
সিএমএসডি’র পরিচালক আরও বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীন কারিগরি কমিটির যথাযথ পরীক্ষা নিরীক্ষার পরই বিভিন্ন সামগ্রী ক্রয় ও তা গ্রহণ করা হয়। কাজেই মাস্ক ক্রয়ের বিষয়ে কেউ কোনো বিভ্রান্তি ছড়াবেন না। যদি কারো কোন অভিযোগ থাকে, তাহলে সরাসরি আমাদের ই-মেইলে বা নাম্বারে যোগাযোগ করুন।
এন ৯৫ মাস্ক ক্রয়ের ব্যাপারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শহীদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান এন-৯৫ মাস্ক তৈরি করে না। কিন্তু এন-৯৫ মাস্কের কাছাকাছি মানের প্রায় এক লাখ পিস মাস্ক আমাদের কাছে আছে। সবাইকে বুঝতে হবে, এন-৯৫ মাস্ক সহজলভ্য না। এই মাস্ক পেতে হলে আমদানির ওপর অবশ্যই আমাদের নির্ভর করতে হবে। দেশে এই মাস্ক বানানোর মত কোনো কোম্পানিই নেই। তাহলে ক্রয়-বিক্রয়ের প্রশ্ন আসলো কিভাবে?
মাস্কের মান নির্ধারণের ব্যাপারে তিনি বলেন, এ জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি কমিটি আছে। তারা মাস্কের মান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রিপোর্ট দেন। এরপর ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কাজেই মাস্কের মানের প্রশ্নে ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
ডা. শহীদুল্লাহ আরও বলেন, এন-৯৫ মাস্ক দেশীয় কোনো প্রতিষ্ঠান তৈরি করে না। আমাদের দেশে যারা ওষুধ প্রস্তুত করেন, সেগুলোর দাম ও মান ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর নির্ধারণ করে থাকে। এখানে সিএমএসডি’র পক্ষ থেকে কোনো জিনিস অতিরিক্ত দামে ক্রয় করার সুযোগ নেই।
তিনি জানান, সিএমএসডি’র সংগ্রহে থাকা পিপিইর ৭০ ভাগই দেশীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের এবং তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর অনুমোদিত। এসব পিপিই সরকার ঘোষিত কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের সেবাদাতা হাসপাতালের আইসিইউ কর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী, স্ক্রিনিংয়ের সঙ্গে জড়িত কর্মী এবং হাসপাতালগুলোর প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জন্য সংরক্ষণ করছি।
টাইমস/এসএন/এইচইউ