কাপড় কিংবা জুতোর সঙ্গে করোনাভাইরাস বাসায় ঢুকতে পারে?

বিশ্ব জুড়ে নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা প্রতিদিন বেড়ে চলেছে, একইসঙ্গে আমাদের দেশেও আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে।

কোভিড-১৯ এর এই মহামারী ঠেকাতে এখন একমাত্র উপায় সামাজিক বিচ্ছিন্নতা। আমরা দীর্ঘদিন ধরে কোভিড-১৯ থেকে বাঁচতে নিজ নিজ গৃহে আবদ্ধ হয়ে রয়েছি।

তবে জীবনের নানা প্রয়োজন মেটাতে এই স্ব-বিচ্ছিন্নতার সময়েও বিভিন্ন কারণে আমাদেরকে বাড়ির বাইরে বেরোতে হচ্ছে, অনেকেই মুদির দোকান বা ওষুধের দোকানে যাচ্ছেন।

বাইরে থেকে ফিরে আপনি ভালো করে হাত ধুয়ে নিচ্ছেন, দরজার নব কিংবা যে স্থানগুলো বারবার স্পর্শ করা হয় সেগুলি পরিষ্কার করছেন। তবুও মনে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।

ভাইরাসটি কী অন্য কোনো ভাবে আমাদের সঙ্গে ঘরে প্রবেশ করতে পারে, বিশেষ করে জামা কিংবা জুতোর সঙ্গে? বাজার বয়ে আনা ব্যাগে কিংবা কোনো পণ্যের সঙ্গে এটি বাহিত হবার সম্ভাবনাই বা কতটুকু?

এবিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওরল্যান্ডোতে অবস্থিত অ্যাডভ্যান্ট হেলথ হসপিটালের ফিজিসিয়ান ড. ভিনসেন্ট স্যু বলেন, “এই ভাইরাসটি সম্পর্কে আমরা অনেক কিছুই জানি না এবং আমরা প্রতিদিন এর সম্পর্কে শিখছি। এখন পর্যন্ত যা জানি, আপনি যদি আপনার আশেপাশে কোথাও যান বা মুদি দোকানে তাৎক্ষণিকভাবে ঘুরে আসেন, তবে আপনার জামা বা জুতা দিয়ে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হবে এমন সম্ভাবনা খুব কম। আমরা বিশ্বাস করি না জুতা বা পোশাক সংক্রমণের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস।”

ড. স্যুয়ের মতে এখনও এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি, যাতে বলা যাবে ভাইরাসটি কাপড় বা জুতোর মাধ্যমে ছড়াতে পারে। তবে আমরা জানি যে এটি মানবদেহের বাইরে বিভিন্ন পদার্থের উপর বেশ কয়েকদিন বেঁচে থাকতে পারে।

বিভিন্ন পদার্থের উপর ভাইরাসটি বেঁচে থাকার সময় আলাদা আলাদা। প্লাস্টিক বা লোহার উপর এটি ২-৩ দিন বেঁচে থাকে। তবে কাপড়ের উপর এটি খুব বেশিক্ষণ বাঁচতে পারে বলে মনে করা হয় না।

একজন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং স্পিরিট হেলথ হসপিটালের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডা. ক্যাথলিন জর্দান বলেন, “ইনফ্লুয়েঞ্জা বা এই জাতীয় অন্য ভাইরাসের উপর আমাদের পূর্ববর্তী গবেষণা বলছে এগুলি কাপড়ের উপর খুব বেশিক্ষণ বাঁচেনা।”

অন্যদিকে, জুতো তুলনামূলকভাবে বেশি নোংরা হয়। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব স্বাস্থ্যসেবা কর্মী করোনা রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত তাদের অর্ধেকের জুতোয় করোনা ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

“আমরা সাধারণত জুতো দিয়ে যা করি তা যথেষ্ট প্রতিরক্ষামূলক। আমরা আমাদের জুতো রান্নাঘরের টেবিলে রাখি না। আমরা মুখে জুতো পড়ি না। এগুলি খুব বেশি স্পর্শ করাও হয়না। আমাদের প্রতিদিনের কাজ কর্মে জুতো একটি নোংরা বস্তু হিসেবেই বিবেচিত হয়,” বলে আরও মন্তব্য করেন জর্দান।

অর্থাৎ জুতোতে যদিও করোনাভাইরাসের জীবাণু বাহিত হবার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে তা থেকে সংক্রমণ ঘটার সম্ভাবনা কম। কারণ, আমরা জুতোকে নোংরা বস্তু হিসেবেই বিবেচনা করি। তবে বাইরে থেকে ফিরে জুতো নিরাপদ স্থানেই রাখা উচিৎ, যাতে তা থেকে কোনোভাবে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে না পারে। তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন May 16, 2024
img
এডিপিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া ১০ মন্ত্রণালয় May 16, 2024
img
কানে প্রথমবারই নজর কাড়লেন অভিনেত্রী ভাবনা May 16, 2024
img
ব্যাংকঋণের সুদহার ১৪ শতাংশের বেশি হবে না: বাংলাদেশ ব্যাংক May 16, 2024
img
কোরবানির জন্য প্রস্তুত ১ কোটি ৩০ লাখ পশু : প্রাণিসম্পদমন্ত্রী May 16, 2024
img
ডোনাল্ড লু’র বক্তব্যের পর ফখরুলের বক্তব্যের কোনো মূল্য নেই: কাদের May 16, 2024
img
২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন May 16, 2024
img
বিমানবন্দরের কাছের ফ্লাইওভারে প্রাইভেটকারে আগুন May 16, 2024
img
দুবাইয়ে ৩৯৪ বাংলাদেশির গোপন সম্পদের মূল্য ২ হাজার ৬৩৬ কোটি May 16, 2024
img
সৌদি পৌঁছেছেন ২১ হাজার ৬৩ হজযাত্রী May 16, 2024