উনিশ শতকের বাঙালি রেনেসাঁ ঐতিহ্যের শেষ বুদ্ধিজীবী হিসেবে যাঁর নাম উচ্চারণ করা হয়, তিনি অন্নদাশঙ্কর রায়। ১৯০৪ সালে ১৫ মে ওড়িশার দেশীয় রাজ্য ঢেঙ্কানালের এক শাক্ত পরিবারে তাঁর জন্ম। তাঁদের পরিবারে নিয়মিত চর্চা হতো সাহিত্য-সংস্কৃতির।
তিনি লন্ডনের ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ’, ‘কিংস কলেজ’, ‘লন্ডন স্কুল অব ইকনমিকস’, ‘লন্ডন স্কুল অব ওরিয়েন্টাল স্টাডিজ’-এ পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী অন্নদাশঙ্কর রায় ওড়িয়া সাহিত্যিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন মাত্র ২০ বছর বয়সেই। ১৬ বছর বয়সে টলস্টয়ের গল্প ‘তিনটি প্রশ্ন’ বাংলায় অনুবাদ করেন তিনি এবং তা প্রবাসী পত্রিকায় ছাপা হয় ১৯২০ সালে। অন্নদাশঙ্করের প্রথম প্রকাশিত প্রবন্ধ তারুণ্য ১৯২৮ সালে প্রকাশিত হয় বিচিত্রা পত্রিকায়।
অন্নদাশঙ্কর রায় কোনো গোষ্ঠীভুক্ত লেখক ছিলেন না। তবে সম্পাদকদের অনুরোধে কল্লোল, কালিকলম, পরিচয় প্রভৃতি পত্রিকার জন্য লেখেন বেশ কিছু লেখা। সব মিলিয়ে তাঁর গ্রন্থের সংখ্যা বাংলায় ১২৩টি, ইংরেজিতে ৯টি এবং ওড়িয়া ভাষায় ৩টি।
অন্নদাশঙ্কর রায় ছিলেন সাহিত্য একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ফেলো। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমির জন্মকাল ১৯৮৬ সাল থেকে তিনি ছিলেন এর আজীবন সভাপতি ও পথিকৃৎ। সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি বহু পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০০২ সালের ২৮ অক্টোবর কলকাতায় অন্তিমশ্বাস ত্যাগ করেন এই বহুমুখী প্রতিভাধর মানুষটি।
তার একটি উক্তি হলো-
‘কোনো বিষয়ে খরচ কমিয়ে
কোনো বিষয়ে খরচ বাড়াতে
হয়, সেটা একটা আর্ট।’