বজ্রপাত থেকে রক্ষার উপায়

তীব্র গরমে স্বস্তি এনে দেয় বৃষ্টি। কিন্তু এই স্বস্তির বৃষ্টির সঙ্গে আসা বজ্রপাত বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের দেশে মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বজ্রপাত হয়ে থাকে। এর মধ্যে এপ্রিল ও মে মাসে বজ্রপাত তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। আর এই বজ্রপাতে প্রায়শই প্রাণহানির শিকার হচ্ছেন দেশের মানুষ।

আকাশের মেঘে বিদ্যুতের অতিরিক্ত চার্জ সঞ্চিত হয়ে একসময় প্রবল শব্দে মাটিতে নেমে বিপরীত চার্জের সঙ্গে মিলিত হয়ে নিষ্ক্রিয় হয়, এটাই বজ্রপাত। উঁচু গাছ বা দালানকোঠায় এটি আঘাত হানে। কারণ, মেঘে সঞ্চিত চার্জ সবচেয়ে কম দূরত্বে ও কম সময়ে বিপরীত চার্জের সঙ্গে মিলিত হতে চায়।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ বজ্রপাত প্রতিরোধের এখন পর্যন্ত কোনো উপায় আবিষ্কার না হলেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার মাধ্যমে প্রাণহানির আশঙ্কা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। সেজন্য ঝড়বৃষ্টির সময় বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে নয়টি পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই অভ্যাসগুলো রপ্ত করার মাধ্যমে বিপদ অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। চলুন সেগুলো জেনে নিই-

  • পাকা বাড়ির নীচে আশ্রয় নিন। ঘন ঘন বজ্রপাত হতে থাকলে কোনো অবস্থাতেই খোলা বা উঁচু জায়গায় না থাকাই ভালো। এ অবস্থায় সবচেয়ে ভালো হয় যদি কোনও দালানের নীচে আশ্রয় নিতে পারেন।
  • উঁচু গাছপালা ও বিদ্যুতের লাইন থেকে দূরে থাকুন। উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এ সব জায়গায় যাবেন না বা কাছাকাছি থাকবেন না। ফাঁকা জায়গায় কোনও যাত্রী ছাউনি বা বড় গাছ ইত্যাদিতে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি থাকে।
  • জানালা থেকে দূরে থাকুন। বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি থাকবেন না। জানালা বন্ধ রাখুন এবং ঘরের ভেতর থাকুন।
  • ধাতব বস্তু এড়িয়ে চলুন। বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না। এমনকি ল্যান্ড লাইন টেলিফোনও স্পর্শ করবেন না। বজ্রপাতের সময় এগুলোর সংস্পর্শ এসে অনেকে আহত হন।
  • টিভি-ফ্রিজ থেকে সাবধান। বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব যন্ত্রপাতি স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও ধরবেন না। বজ্রপাতের আভাষ পেলে আগেই এগুলোর প্লাগ খুলে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করুন। অব্যবহৃত যন্ত্রপাতির প্লাগ আগেই খুলে রাখুন।
  • বজ্রপাতের সময় রাস্তায় গাড়িতে থাকলে যত দ্রুত সম্ভব বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করুন। যদি প্রচণ্ড বজ্রপাত ও বৃষ্টির সম্মুখীন হন তবে গাড়ি কোনো পাকা ছাউনির নীচে নিয়ে যান। এ সময় গাড়ির কাঁচে হাত দেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।
  • ঝড়-বৃষ্টির সময় রাস্তায় জল জমা আশ্চর্য নয়। তবে বজ্রপাত অব্যাহত থাকলে সে সময় রাস্তায় বের না হওয়াই মঙ্গল। একে তো বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। উপরন্তু কাছাকাছি কোথাও বাজ পড়লে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়।
  • বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক। যদি একান্ত বেরোতেই হয় পা ঢাকা জুতো পড়ে বের হোন। রবারের গাম্বুট এ ক্ষেত্রে সব থেকে ভালো কাজ করবে।
  • বজ্রপাতের সময় রাস্তায় চলাচলের সময় আশেপাশে খেয়াল রাখুন। যে দিকে বাজ পড়ার প্রবণতা বেশি সে দিক বর্জন করুন। কেউ আহত হলে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on: