দুগ্ধজাত খাবার ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে সক্ষম

বর্তমান যুগে আমাদের জটিল জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসের কারণে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তাই গবেষকরা খুঁজে চলেছেন কিভাবে এসব দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি কমানো যায়।

স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের এই খোঁজে দুগ্ধজাত খাবারের প্রতিও নজর ছিল। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি হ্রাস করতে সক্ষম। সম্প্রতি এক গবেষণা বলছে, দুগ্ধজাত খাবার শুধু উচ্চ রক্তচাপ নয় একই সাথে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও হ্রাস করতেও কার্যকর।

বিএমজে ওপেন ডায়াবেটিস রিসার্চ অ্যান্ড কেয়ারে প্রকাশিত এক গবেষণা পত্রে দুগ্ধজাত খাবারের সাথে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস হবার সম্পর্কটি উদঘাটিত হয়েছে। ১,৫০,০০০ জন লোকের উপর সমীক্ষা করে গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, যারা নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করেন তাদের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার হার তুলনামূলকভাবে কম।

গবেষণার স্বার্থে এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার মোট ২১টি দেশের অংশগ্রহণকারীরা সমীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। অংশগ্রহণকারীদের বয়স ৩৫ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ছিল।

দুগ্ধজাত খাবারের মধ্যে দুধ, দই, পনীর ও দুধের তৈরি নানা খাদ্যদ্রব্য অন্তর্গত ছিল। তবে বাটার ও ক্রিমকে এই তালিকার বাইরে রাখা হয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীরা গড়ে প্রতিদিন ১৭৯ গ্রাম দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করেন, যা এক গ্লাস দুধ বা দইয়ের তুলনায় কিছুটা কম। প্রতি গ্লাস দুধ ২৪৪ গ্রাম হিসেবে ধরা হয়েছিল।

গবেষণায় উঠে এসেছে প্রতিদিন কমপক্ষে দুইবার দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করলে তা মেটাবলিক সিনড্রোমের ঝুঁকি ২৪ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করে। তবে, গবেষণায় আরও দেখা গেছে যারা লো ফ্যাট মিল্ক গ্রহণ করেন তাদের মধ্যে এ ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পায় না। ফলে গবেষকরা বলছেন, লো ফ্যাট মিল্ক সব সময় স্বাস্থ্যকর এমনটা দ্রুব সত্য হিসেবে ধরে নেয়া যাবে না।

প্রতিদিন দুইবার দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করলে উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ১১-১২ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পায় বলেও গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে।

পপুলেশন হেলথ রিসার্চ ইন্সটিউটের একজন প্রধান ইনভেস্টিগেটর ও আলোচিত গবেষণার সহকারী লেখক এন্ড্রু মেন্টে এ বিষয় বলেন, “দুগ্ধজাতীয় খাবার উচ্চমানের প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, দস্তা, ফসফরাস, ভিটামিন এ, বি-১২, এবং রাইবোফ্লাভিনসহ প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ করে।”

এর ফলে মেটাবলিক সিড্রোম, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস পায় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এই গবেষণা বিশ্বব্যাপী কম খরচে এসব দুরারোগ্য ব্যাধিগুলির ঝুঁকি হ্রাস করার উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সহায়তা করবে বলে আশা করছেন গবেষকরা। তথ্যসূত্র: মেডিক্যাল নিউজ টুডে

 

টাইমস/এনজে/জিএস

Share this news on: