ছেলের মৃত্যুর পর নামাজ শেষে সেই ঘরেই অগ্নিদগ্ধ সাংবাদিক!

মোয়াজ্জেম হোসেন নান্নু। যুগান্তরের চিফ ক্রাইম রিপোর্টার। অগ্নিদগ্ধে একমাত্র ছেলের ছেলের মৃত্যুর পর এবার তিনিও অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন। কোমর থেকে মাথা পর্যন্ত প্রায় ৫০ শতাংশই পুড়ে গেছে বলে এই মাত্র জানালো তার অসহায় বাকরুদ্ধ স্ত্রী।

এই পরিবারের দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়ছে না। কিছু দিন আগে এই দম্পতির একমাত্র যুবক ছেলে নিজ ফ্ল্যাটে গভীর রাতে অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করে। বাবা মার চোখের সামনেই পাশের বারান্দায় পুড়ে কংকাল হয় তাদের একমাত্র বুকের ধন। অবর্ননীয়, অকল্পনীয় সেই শোক না কাটতেই সেই ছেলের রুমের সেই বারান্দায় থাকা অবস্থায় আবার সেই ঘরেই বিকট শব্দে আগুন ধরে যায়। বৃহস্পতিবার রাতে দৈনিক যুগান্তরে অফিস শেষে ফিরে খেয়ে নামাজ পড়ে। এরপর ঘুমোনোর আগে নান্নু গিয়েছিল সেই অভিশপ্ত বারান্দায় যেখানে তার সন্তান পুড়ে কংকাল হয়। ঠিক তখনই ঘটে দুর্ঘটনা। ছেলের সেই ঘরেই আবার আগুন ধরে যায়। তার স্ত্রী জানান, নান্নু দৌড়ে বাথরুমে ঢুকে শাওয়ার ছেড়ে দেয়। পেছনে তখন আগুন ঝলছিল। বাথরুমে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। কিছুটা সুস্থ হলে ঘরের আগুন নেবানোর চেষ্টা করে। কিন্তু এক সময়ে আত্মসমর্পন করে আগে থেকেই বিভিন্ন রোগে অসুস্থ নান্নু। এরপর রাতেই তাকে নেয়া হয়েছে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, রোগীর অবস্থা খুবই ক্রিটিক্যাল। তার শরীরে গভীর দগ্ধ। প্রায় ৬০ শতাংশের মতো পুড়ে গেছে। আশংকাজনক হওয়ায় ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে সকালে তার স্ত্রী শাহীনা আহমেদ পল্লবী জানান, রাত্রিকালীন অফিস শেষে বাসায় ফিরে খাওয়া দাওয়ার পর রাত ৩টার দিকে হঠাৎ করে শব্দ হয়। গ্যাসের গন্ধও পাওয়া যাচ্ছিল। গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে সম্ভবত অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। তাতেই দগ্ধ হন তিনি।

 

টাইমস/জেকে

Share this news on:

সর্বশেষ