পুলিশের গুলিতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক আহতের ঘটনায় এবার বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন। এ নিয়ে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছে অঙ্গরাজ্যের গভর্নর।
সোমবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
রয়টার্স জানায়, গত রোববার সন্ধ্যায় উইসকনসিনের কেনোসা শহরে পুলিশের গুলিতে জ্যাকব ব্লেক নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক আহত হন। জ্যাকবকে পেছন থেকে গুলি করে পুলিশ। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আর এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরই প্রতিবাদে ফেটে পড়ে উইসকনসিনের বাসিন্দারা। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করে। সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে তারা।
বিক্ষোভ দমাতে টিয়ার গ্যাস ছুড়ে পুলিশ। এসময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে অঙ্গরাজ্যের গভর্নর কারফিউ জারি করে। কিন্তু কারফিউ ভেঙ্গে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ চালিয়ে যায় আন্দোলনকারীরা।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছেন, সোমবার বিকালে বিক্ষোভকারীদের তোপের মুখে পড়েন কেনোসা শহরের মেয়র জন আন্তারামিয়ান। কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে গুলি করার ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মেয়র জন আন্তারামিয়ানের পথ অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, রোববার রাতে কেনোসা শহরে গাড়িতে ওঠার জন্য ২৯ বছর বয়সী জ্যাকব ব্লেক যখন হেঁটে যাচ্ছেন, তখন তাকে অনুসরণ করছে দুই পুলিশ সদস্য। ব্লেক গাড়ির দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে তার পিঠে গুলি করে দুই পুলিশের একজন। সেসময় গাড়ির ভেতরে বসে থাকা তার তিন সন্তান পুরো ঘটনা দেখতে পায়।
এঘটনায় কেনোসা পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, রোববার একটি ‘পারিবারিক ঘটনা’র মীমাংসা করতে পুলিশ সদস্যদেরকে ডাকা হয়েছিল। আহত ব্লেককে পুলিশই হাসপাতালে নিয়ে গেছে। তবে কেন তাকে গুলি করা হলো সে ব্যাপারে ওই বিবৃতিতে বিস্তারিত জানানো হয়নি।
তবে উইসকনসিনের আইন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যদেরকে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। অঙ্গরাজ্যটির অপরাধ তদন্ত বিভাগ এ ঘটনায় তদন্ত করছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ মে যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের বৃহত্তম শহর মিনিয়াপলিসে পুলিশের নির্যাতনে জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক নিহত হওয়ার পর দেশটিতে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভ ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। যা পরবর্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে যায়। জর্জ ফ্লয়েড হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই পুলিশের গুলিতে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ যুবক আহতের ঘটনায় তাই আবারো ফুঁসে উঠেছে সাধারণ মার্কিনীরা।
টাইমস/এসএন