করোনায় বাবাকে হারিয়ে দিশেহারা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, ধার-দেনায় চলছে সংসার

বাবা-মা আর দুই ভাইবোন মিলে চার সদস্যের পরিবারে ভালই চলছি আবরার রহমানের। কিন্তু গত ১৬ সেপ্টেম্বর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আবরারের বাবা। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল আবরারের বাবা। আবরার গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

এদিকে বাবার মৃত্যু পর পরিবারের বাকি সবার করোনা শনাক্ত হয়। গত ১৯ সেপ্টেম্বর মা-বোনসহ সপরিবারে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয় বগুড়ার টি এম এস এস মেডিকেল কলেজে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবরারের মায়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে আইসিইউতে নিতে হয়। ২৯ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয়বার করোনার নমুনা পরীক্ষায় সবার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।

হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিতে গিয়ে দেখে বিল এসেছে প্রায় তিন লাখ টাকা। কয়েকদিন আগেই পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তিকে হারায় সে। এমতাবস্থায় এতো টাকা পরিশোধে তাকে হাত পাততে হয় আত্মীয় স্বজনের কাছে। ধার-দেনা করে কোনো রকমে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে আবরার।

করোনার এমন পরিস্থিতি, তার উপর আবার কোনো উপার্জন না থাকায় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েও আর্থিক সংকট চলছে আবরারের পরিবারে। একদিকে সংসার চালানোর চিন্তা, অন্যদিকে ধার-দেনা পরিশোধের চিন্তায় দিশেহারা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবরার।

এ বিষয়ে আবরার জানান, ‘বাবা মারা যাওয়ার পরে আমাদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। এর কয়েকদিন পরেই আবার সপরিবারে করোনা আক্রান্ত হই। মা অনেক বেশি অসুস্থ হওয়ায় তাকে আইসিইউতে নিতে হয়েছিল। এতে প্রায় ৩ লাথ টাকা বিল আসে। কিন্তু আমার পক্ষে এতো টাকা পরিশোধ করা মোটেও সম্ভব ছিল না।

তিনি আরও জানান, চাচাদের কাছ থেকে ধার-দেনা করে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করেন তিনি। কিন্তু বাবাকে হারিয়ে এমন আর্থিক সংকটে তার পক্ষে এতগুলো টাকা পরিশোধ করা কোনভাবেই সম্ভব না। এছাড়াও কোনো আয় না থাকায় তার পরিবার বর্তমানে আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে দিনাতিপাত করছে।

এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবি’র আইন বিভাগের চেয়ারম্যান মনসুরা খানম জানান, বিভাগের একার পক্ষে এতোগুলো টাকা সহযোগিতা করা সম্ভব হবে না। এজন্য ছাত্র শিক্ষকসহ সবার সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে এখনও কোনো লিখিত আবেদন দেওয়া হয়নি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উপদেষ্টা ড. মো. শরাফত আলী বলেন, আবরার করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিল। আর্থিকভাবে যদি সে সংকটের মধ্যে থাকে তাহলে আবেদনপত্র পেলে আলোচনার ভিত্তিতে সহযোগিতা করা হবে।

এ ব্যাপারে আবরার রহমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী মো. তুহিন বাদশা জানান, করোনায় আক্রান্ত হয়ে আবরারের বাবার মৃত্যুর পর তার পরিবারের সবার করোনা শনাক্ত হয়। তাদের চিকিৎসায় অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। বর্তমানে আবরারের পরিবার আর্থিকভাবে খুবই কষ্টে রয়েছে। তাই আমরা তার পরিবারকে সহযোগিতা করতে বিভিন্ন মাধ্যমে টাকা তুলে সহযোগিতার উদ্যোগ নিয়েছে।

আবরারকে সহযোগিতা করতে আর্থিক সাহায্য পাঠাতে পারেন তার সহপাঠী মো. তুহিন বাদশার বিকাশ-পার্সোনাল (০১৮৪৯১৯৮৪৭৯), রকেট-পার্সোনাল (০১৮৪৯১৯৮৪৭৯৫) নাম্বারে।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ধান কাটা, ঝড়-বৃষ্টির কারণে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল, তবে সন্তোষজনক : ওবায়দুল কাদের May 08, 2024
img
২৩ ফুট লম্বা শাড়ির আঁচলে রূপকথার পরী আলিয়া! May 08, 2024
img
সাকিব-সৌম্য-মুস্তাফিজকে নিয়ে বাংলাদেশের দল ঘোষণা May 08, 2024
img
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ৩০-৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে: সিইসি May 08, 2024
img
জনগণের কষ্ট লাঘবে সরকার সবসময় সচেষ্ট: প্রধানমন্ত্রী May 08, 2024
img
এক লাফে ৭ টাকা বেড়ে ডলারের দাম উঠল ১১৭ টাকায় May 08, 2024
img
শুধু ইসলাম নয়, সব ধর্মাবলম্বীদের কল্যাণে কাজ করছে সরকার’ May 08, 2024
img
বাংলাদেশে করোনা টিকা চলবে, জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী May 08, 2024
img
হজ কার্যক্রম উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী May 08, 2024
img
পঞ্চগড়ে বিএসএফের গুলিতে ২ বাংলাদেশি যুবক নিহত May 08, 2024