নারায়ণগঞ্জে অপহরণের পর শিশুকে হত্যা: যুবকের ডাবল ফাঁসি

নারায়ণগঞ্জে শিশু আকিব হোসেনকে (৫) অপহরণের পর হত্যা মামলার রায়ে রতন (২৬) নামের এক যুবকের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ শাহিন উদ্দিন এ রায় দেন। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন আসামি রতন।

দণ্ডপ্রাপ্ত মো. রতন কুমিল্লার মেঘনা থানার মির্জানগর এলাকার মৃত জজ মিয়ার ছেলে। তিনি নারায়ণগঞ্জে বন্দর উপজেলার একরামপুর ইস্পাহানি এলাকার রাজ্জাক মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি রকিব উদ্দিন বলেন, মামলার রায়ে রতনকে অপহরণের একটি ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত; একই সঙ্গে মুক্তিপণ দাবির আরেক ধারায় মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আকিবকে হত্যার দায়ে আরেকটি ধারায় রতনকে আরেকবার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। জরিমানার অর্থ আদায় করে বাদীকে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এই রায় দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আদালত। যাতে অদূর ভবিষ্যতে কোনো শিশুকে অপহরণের পর হত্যার দুঃসাহস কেউ না দেখায়।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার একরামপুর ইস্পাহানি এলাকার ট্রলারচালক জামাল হোসেনের ছেলে আকিব হোসেন বাড়ির সামনে থেকে নিখোঁজ হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় আকিবের বাবা জামালের মোবাইলে কল আসে। কল রিসিভ করে তিনি জানতে পারেন আকিবকে অপহরণ করা হয়েছে। মুক্তিপণ হিসেবে ২০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিলে আকিবকে ফেরত দেবে বলা হয়। টাকা না দিলে আকিবকে হত্যা করবে বলে জানান অপহরণকারী।

এরই মধ্যে আকিবের পরিবার জানতে পারে অপহরণকারী একই এলাকার প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া রতন। বিষয়টি র‌্যাবকে জানানো হয়। এরপর ফতুল্লার পশ্চিম মাসদাইর এলাকা হতে রতনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১১। তবে গ্রেপ্তারের আগেই আকিবকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় শিশুটির বাবা জামাল হোসেন বাদী হয়ে বন্দর থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন রতন। ঘটনা তদন্ত শেষে রতনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

রায়ের পর আদালপাড়ায় উপস্থিত শিশু আকিবের বাবা জামাল হোসেন ও মা রুমা বেগম সন্তান হত্যার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। জামাল হোসেন বলেন, আকিবের রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। রায় যেন দ্রুত কার্যকর হয়। আসামির ফাঁসি দিয়ে দেশবাসীকে জানিয়ে দেক অপরাধ করে কেউ পার পায় না। আমার মতো কোনো বাবার বুক যেন খালি না হয়।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: