ডায়াবেটিস রোগীরা কি ভাত খাবেন?

বিশ্বব্যাপী এক নীরব ঘাতক ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস তাড়াতে অনেকেই ভাত খাওয়া ছেড়ে দেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে ভাত খাওয়া ছেড়ে দেয়া কি আবশ্যক ?

মূলত ডায়াবেটিস প্রতিরোধে একটি সমন্বিত ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। আর তা হলো সুষম খাদ্যাভ্যাস, স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখা এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করা।

একজন টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সঠিক পরিমাণে শর্করা, আমিষ ও চর্বি তিনটিই প্রয়োজন। সেই সাথে ভিটামিন ও খনিজ তো থাকছেই।

এখানে তিন ধরনের শর্করা রয়েছে- স্টার্চ, সুগার ও ফাইবার। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ফাইবার বা আঁশ। কারণ অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য ফাইবার খুবই উপকারী। তাছাড়া এটা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রন করে থাকে।

বিভিন্ন ধরনের শস্যদানা, শাকসবজি, ফলমূল ও দুগ্ধজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে আঁশ রয়েছে।

তাই ডায়াবেটিস তাড়াতে গিয়ে যদি ভাত খাওয়া একেবারে ছেড়ে দেন, তবে তা হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ একজন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য সব ধরনের পুষ্টি উপাদান দরকার, যার অনেকগুলোই ভাতে রয়েছে।

এশিয়াসহ ভারতীয় উপমহাদেশে ভাত একটি অপরিহার্য খাবার। আমাদের দৈনন্দিন খাবারে ভাত একেবারে ছেড়ে দেয়া কঠিন। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এমন একটি খাদ্যাভ্যাস থাকবে, যেখানে ভাত থাকবে, তবে তা পরিকল্পিত হতে হবে।

১. চালের পরিমাণ

এক কাপ চালের তিন ভাগের এক ভাগে ১৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে। তাই ডায়াবেটিস রোগিদের ক্ষেত্রে প্রতিবারের খাবারে কার্বোহাইড্রেটের জন্য এটাই যথেষ্ট। ভাতের সাথে শস্যদানা, শাকসবজি, ফলমূল ও প্রচুর আঁশজাতীয় খাবার খাবেন, যা থেকে অন্যান্য পুষ্টিগুণ আসবে।

২. আঁশজাতীয় খাবার

ভাতের পাশাপাশি ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন ২০-৩০ গ্রাম দ্রবণীয় আঁশ গ্রহণ করতে পরামর্শ দেয়া হয়। শাকসবজি, ফলমূল, শিম, মটরশুঁটি, কাজু বাদাম ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় আঁশ রয়েছে। আঁশজাতীয় খাবার হজম ক্ষমতা বাড়াবে এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করবে।

৩. চালের ধরন

ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে লম্বা দানার বাসমতি চাল ও বাদামি চাল খেতে বলা হয়। কারণ এসব চালে সাদা চালের তুলনায় বেশি পরিমাণে আঁশ রয়েছে। যা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে।

৪. রান্নার ধরন

খোলা পাত্রে ভাত রান্না করুন ও রান্না শেষে ভাতের পানি (মাড়) ফেলে দিন, যাতে ভাতে অতিরিক্ত স্টার্চ না থাকে।

৫. পরিপূরক খাদ্য

বাজারে ভাতের বিকল্প বিভিন্ন ধরনের খাবার রয়েছে যা প্রক্রিয়াজাত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাই একেবারে ভাত খাওয়া বাদ না দিয়ে ভাতের পরিপূরক হিসেবে বিকল্প খাবার খেতে পারেন।

৬. ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও খনিজ

যেসব খাবারে বেশি পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম ও খনিজ রয়েছে সেসব খাবার বেশি খেতে হবে। কারণ এটা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে।

পরিশেষে নিয়মিত প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা লিখে রাখতে হবে এবং এটা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু উপকারী তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, ধোঁয়া দেখলেই পানি স্প্রে May 06, 2024
img
দুপুরের মধ্যে ৮০ কিমি. বেগে বৃষ্টির আভাস, নৌ বন্দরে ২ নম্বর সংকেত May 06, 2024
img
হামাসের হামলায় ইসরায়েলের ৩ সেনা নিহত, বন্ধ কেরাম শালোম ক্রসিং May 06, 2024
img
পাঁচ দিনের সফরে ঢাকায় আইওএম'র মহাপরিচালক May 06, 2024
img
রাজধানীতে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে নামল শিলাবৃষ্টি May 05, 2024
img
রিয়াদ-হৃদয়ের ব্যাটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয় বাংলাদেশের May 05, 2024
img
তুমি আসবে বলেই আকাশ মেঘলা, বৃষ্টি এখনো হয়নি: পরীমণি May 05, 2024
img
দেশজুড়ে কালবৈশাখী ঝড়ের সতর্কতা জারি May 05, 2024
img
বাংলাদেশকে ১৩৯ রানের লক্ষ্য দিলো জিম্বাবুয়ে May 05, 2024
img
শুক্রবার ক্লাস নেওয়া নিয়ে ফেসবুক পোস্ট ভুলবশত: শিক্ষা মন্ত্রণালয় May 05, 2024