দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপির করা শোকজের জবাব দিয়েছেন দলটির অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। ১৪ ডিসেম্বর বিএনপির যুগ্ম মহাসচিক রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে তাকে শোকজ করা হয়।
শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) শোকজের আনুষ্ঠানিক জবাব দিতে রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসস্থানে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন মেজর হাফিজ। একজন যুগ্ম মহাসচিবকে দিয়ে দলের একজন ভাইস চেয়ারম্যানকে শোকজ করায় তিনি সংবাদ সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এধরণের শোকজ অসম্মানজনক উল্লেখ করে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন বলেন, রুহুল কবীর রিজভীর মাধ্যমে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানোর প্রক্রিয়া দলীয় প্রটোকল ও সৌজন্যতার খেলাপ।
শোকজের চিঠির ভাষা ‘আক্রমনাত্মক’, ‘অসৌজন্যমূলক’ এবং অসত্য দাবি করে তিনি বলেন, দলের ভেতরে বিভিন্ন কমিটি নিয়ে মনোনয়ন বাণিজ্য হচ্ছে। কাজেই ২০২১ সালের মধ্যে দলের জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে হবে।
এসময় কারণ দর্শানোর নোটিশের উত্তরে লিখিত বক্তব্যে মেজর হাফিজ বলেন, আমি একজন যুদ্ধাহত, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা। বিজয়ের মাসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে অসৌজন্যমূলক ভাষায় অসত্য অভিযোগ সম্বলিত কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়ে হতবাক হয়েছি। আমি বিগত ২৯ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতি সাথে সংশ্লিষ্ট।
মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তার বিরুদ্ধে আনা ১১টি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে লিখিত বক্তব্যে বলেন, এক-এগারোর সময়কালে আমার অনুরোধে বিতর্কিত সেনা কর্মকর্তারা বিএনপির ১০৫ জন এমপিকে ফেরদৌস কোরাইশীর নেতৃত্বাধীন কিংস পার্টিতে যোগদান থেকে বিরত রাখেন।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া সেনা সমর্থিত তত্ত¡বাবধায়ক সরকারের আমলে বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করে করণীয় নির্ধারণ করেছি। আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য সেনা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধও করেছি।
মেজর হাফিজ বলেন, দলের বিভিন্ন পর্যায়ে কমিটি নিয়ে বাণিজ্য এবং মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। দলের স্থায়ী কমিটির একজন সিনিয়র সদস্যের নেতৃত্বে একটি কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি তদন্ত করে কাউন্সিল সভার রিপোর্ট পেশ করা হোক। ভবিষ্যতে সকল নির্বাচনে দল থেকে একজনকে প্রার্থী এবং একজনকে বিকল্প প্রার্থী রূপে মনোনয়ন দেয়া হোক। এতে মনোনয়ন বাণিজ্যের সুযোগ কমে যাবে।
তিনি আরও বলেন, দলের কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপিত হলে তদন্তের পর তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে সৎ, নির্লোভ নেতৃত্ব উঠে আসছে। আর এতে মহান নেতা শহীদ জিয়াউর রহমানের আত্মা শান্তি পাবে।
বক্তব্যের শেষে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমাকে যদি দোষী সাব্যস্ত করা হয়, তাহলে আমি যেকোনো শাস্তি মাথা পেতে নিতে প্রস্তুত আছি।
টাইমস/এসএন