শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্রে প্রকাশ্যে ফায়ারিং স্কোয়াডে ১৪ আসামির মৃত্যুদণ্ড

দুই দশক আগে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বোমা পেতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় ১৪ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একটি ফায়ারিং স্কোয়াডে প্রকাশ্যে প্রত্যেক আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ দেন বিচারক।

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমেই এ ধরনের নৃশংস ও ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৪ আসামি হলেন মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আনিসুল ইসলাম ওরফে আনিস, মাহমুদ আজহার, রাশেদুজ্জামান ওরফে রাশেদ খাঁ, সরোয়ার হোসেন মিয়া, তারেক হোসেন ওরফে মারফত আলী, আবদুল ওয়াদুদ মোল্লা, আজিজুল হক, লোকমান, ইউসুফ ওরফে মোসহাব মোড়ল, শেখ মোহাম্মদ এনামুল হক, মোসাহেব হাসান ওরফে রাশু, আমিরুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম। আসামিদের মধ্যে পাঁচজন পলাতক। তাঁরা হলেন আজিজুল, লোকমান, ইউসুফ, এনামুল ও মোসাহেব

আসামিদের সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামীর (হুজি) সদস্য বলে তদন্তে উঠে এসেছে। এদিন কারাগারে থাকা আসামিদের সকালে রায়ের জন্য আদালতে নিয়ে আসা হয়। আদালত এলাকার নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়।

২০০০ সালের ২২ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান সরকারি আদর্শ কলেজের প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভার প্যান্ডেল তৈরির সময় শক্তিশালী একটি বোমা পাওয়া যায়। সেনাবাহিনীর একটি দল মাটি খুঁড়ে ৭৬ কেজি ওজনের ওই বোমা উদ্ধার করে। পরদিন ২৩ জুলাই ৪০ কেজি ওজনের আরেকটি বোমা উদ্ধার করা হয়।

ওই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা, হত্যার ষড়যন্ত্র এবং বিস্ফোরক আইনে কোটালীপাড়া থানায় তিনটি মামলা করে পুলিশ।

এর মধ্যে হত্যাচেষ্টা মামলায় ২০১৭ সালের ২০ অগাস্ট নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন দল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি-বি) দশ নেতাকর্মীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয় ঢাকার একটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল।

গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আপিলের রায়েও ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে হাই কোর্ট। যাবজ্জীবন সাজার এক আসামি এবং ১৪ বছর কারাদণ্ডের দুই আসামির সাজাও বহাল রাখা হয়েছে। ১৪ বছর সাজার এক আসামিকে খালাস দেয় হাই কোর্ট।
আর হত্যার ষড়যন্ত্রের এ মামলায় ২০০১ সালের ১৫ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। আদালত ২০০৪ সালে ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে।

রাষ্ট্রপক্ষে ৫০ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৪ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হলে ১১ মার্চ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। সেই শুনানি শেষে বিচারক রায়ের জন্য ২৩ মার্চ দিন রাখেন।

 

টাইমস/এসজে

Share this news on: