ড্রামে তরুণীর লাশ: পুলিশ কনস্টেবলসহ গ্রেপ্তার ৪

রাজশাহীতে ডোবায় পড়ে থাকা ড্রামের ভেতর থেকে উদ্ধার হওয়া তরুণীর লাশের পরিচয় মিলেছে। গ্রেপ্তারের পর হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ওই তরুণীর প্রেমিক লাশের পরিচয় জানান।

নিহত ওই তরুণীর নাম ননিকা রানী রায় (২৪)। তিনি ঠাকুরগাঁও সদরের মিলনপুর গ্রামের বাসিন্দা। ননিকা মহানগরীর একটি ক্লিনিকে নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মহানগরীর পাঠানপাড়া এলাকার একটি মেসে থাকতেন ননিকা। রোববার রাতে তার লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

রাজশাহী পিবিআই পুলিশের অতিরিক্ত সুপার আবুল কালাম আজাদ জানান, নিমাইচন্দ্র সরকার (৪৩) নামে পুলিশের এক কনস্টেবলসহ চারজনকে গ্রেপ্তারের পর তারা বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

এর আগে রোববার ভোরে ওই তরুণীর খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ত পুলিশ কনস্টেবল নিমাই চন্দ্র সরকারকে (৪৩) গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাইক্রোবাসচালকসহ তার আরও তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। এ ছাড়া এ সময় লাশ বহনকারী মাইক্রোবাসটিও জব্দ করা হয়।

আবুল কালাম আজাদ জানান, গ্রেপ্তার নিমাই চন্দ্র সরকারের বাড়ি পাবনার আতইকুল্লা উপজেলার চরাডাঙ্গা গ্রামে। তিনি রেল পুলিশের (জিআরপি) রাজশাহী থানায় কর্মরত। রোববার সকালে রাজশাহী পিবিআইয়ের একটি টিম নাটোরের লালপুরে বোনের বাড়ি থেকে নিমাইকে গ্রেপ্তার করে। তথ্যের ভিত্তিতে বাকিদেরও গ্রেপ্তার করা হয়।
তারা হলেন— রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ আদারিপড়ার কবির আহম্মেদ (৩০), শ্রীরামপুর এলাকার সুমন আলী (৩৪) এবং মাইক্রোবাসচালক বিলশিমলা এলাকার আব্দুর রহমান (২৫)।

পিবিআই আরও জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন কনস্টেবল নিমাই। তিনি জানিয়েছেন, ছয় থেকে সাত বছর ধরে ননিকা রানীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয়। সম্প্রতি ননিকা বিয়ের জন্য চাপ দিলে তাকে হত্যা করে নিমাই। পরে ড্রামে লাশ ভরে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গিয়ে ফেলে দেয়।

পিবিআই জানায় সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত বলে স্বীকার করেছেন। আজ সোমবার তাদের আদালতে উঠানো হবে। আরও অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।

জানা গেছে, নিমাই চন্দ্র সরকার গত সাত বছর ধরে রাজশাহী জিআরপি থানায় কর্মরত। এর আগে তিনি রাজশাহী মহানগর পুলিশে (আরএমপি) কর্মরত ছিলেন। আরএমপির গোয়েন্দা শাখায় চাকরি করার সময় অফিসের পাশের বাড়ির এক কলেজছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে নগ্ন ভিডিও তৈরি করেন তিনি। ভিডিওটি কম্পিউটারের দোকান থেকে সেই সময় মানুষের হাতে হাতে চলে যায়।

এ কারণে সেই সময় তাকে বরখাস্ত করা হয়। পরে নানা কৌশলে চাকরি ফিরে পেয়ে রেল পুলিশে যোগ দেন নিমাই।

 

টাইমস/এসজে

Share this news on: