ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে। সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, কক্সবাজার, চট্টগ্রামসহ উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার প্রভাবে সমুদ্রের জোয়ারের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আরও দেখুন- ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াসের’ প্রভাব বাংলাদেশে কেমন হবে জানাল ভারত
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘনীভূত ও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বুধবার দুপুর নাগাদ উত্তর উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করবে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার; যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিমি পর্যন্ত বাড়ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছের সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস সরাসরি আঘাত হানার সম্ভাবনা খুব বেশি না থাকলেও তার যথেষ্ট প্রভাব পড়বে বাংলাদেশ উপকূলে।
এদিকে মঙ্গলবার বিকালে বরগুনার অর্ধশত গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এসব এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে মানুষ। জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে।
এছাড়া সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামেও জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। শ্যামনগরের সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ফসল, ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে গেছে।
অপরদিকে পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, নোয়াখালী, কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন, পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা, ভোলা, ফেনী ও চট্টগ্রামের উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে চার-পাঁচ ফুট উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে ইয়াসের প্রভাবে এরই মধ্যে গাছ-পালা উপড়ে যেতে শুরু করে। এ দ্বীপের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কোস্টগার্ড। সেন্টমার্টিনের স্থানীয়রা জানিয়েছে, জোয়ারের পানি ও দমকা বাতাসে রাস্তাঘাট ও গাছ-পালা ভেঙে পড়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছে।
কোস্টগার্ড সেন্টমার্টিন স্টেশনের ইনচার্জ লে. কমান্ডার রাসেল মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, সেন্টমার্টিনের ১০ হাজার ২৬ জন বাসিন্দাকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে এ দ্বীপের হোটেল, রিসোর্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ইউনিয়ন পরিষদের ভবনে স্থানীয়দের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
টাইমস/এসএন