প্রেমের টানে বাড়িছাড়া দুই কিশোর–কিশোরীর বিষয়ে ডাকা সালিসে পছন্দ হওয়ায় কিশোরীকে বিয়ে করেছেন এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান। অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের নাম শাহিন হাওলাদার (৬০)। তিনি বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে সালিসে বিচার না পেয়ে উল্টো চেয়ারম্যান কিশোরীকে চাপ প্রয়োগ করে বিয়ে করায় আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে প্রেমিক। কিশোর বয়সী প্রেমিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন।
জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ২১ জুন অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর প্রথম স্ত্রী আছেন। সেই সংসারে তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলে বিবাহিত।
ছবি- অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার
স্থানীয়রা জানিয়েছে, ভিকটিম কিশোরী স্থানীয় বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশুনা করতো। তার বাবা দিনমজুর। ওই কিশোরীর সঙ্গে এক কিশোরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বৃহস্পতিবার তারা দুজন বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে কিশোরীর বাবা চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়ার জন্য বলেন।
পরে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার আনুষ্ঠানিকভাবে কিশোর–কিশোরীর বিয়ে দেয়ার কথা বলে শুক্রবার কনকদিয়া ইউপি কার্যালয়ে যেতে বলেন। সেই অনুযায়ী শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে দুই পরিবারের সদস্যরা ইউপি কার্যালয়ে উপস্থিত হয়। সেখানে মেয়েটিকে দেখে পছন্দ হয়ে যায় চেয়ারম্যানের। তিনি মেয়েটিকে বিয়ে করার আগ্রহ দেখান। এসময় তিনি ওই কিশোরকিশোরীকে এ বিষয়ে রাজী না হলে হত্যার হুমকি দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, চেয়ারম্যান ওই কিশোরকিশোরী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সাদা কাগজে সই নিয়েছেন। পরে চেয়ারম্যান ওই কিশোরীকে জোরপূর্বক বিয়ে করে বাকিদের ইউপি কার্যালয় থেকে বের করে দেন।
এদিকে নিজের প্রেমিকাকে চেয়ারম্যান জোর করে বিয়ে করায় কিশোর বয়সী প্রেমিক আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে বলে জানা গেছে। শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় কাজি মো. আবু সাদেক বিয়ে পড়ানোর কথা স্বীকার করে বলেন, ‘মেয়েটির জন্মনিবন্ধন দেখে বিয়ে পড়িয়েছি।’
ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘নিজের প্রয়োজনে খুবই গরিব ঘরের একটি মেয়েকে বিয়ে করেছি। কাউকে মেরে ফেলার হুমকি কিংবা জোর করার বিষয়টি সত্য নয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে তা সঠিক কাজ হয়নি। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টাইমস/এসএন