পাকিস্তানের সঙ্গে দুই হাজার কোটি ডলার চুক্তি যুবরাজ সালমানের

পাকিস্তান সফরের প্রথম দিনই দুই হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। রোববার রাতে এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে দু'দিনের সফরে পাকিস্তানে পৌঁছান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। এরপর দুই দেশের মধ্যে ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এর আগে দুই দেশের মধ্যে ১ হাজার কোটি ডলারের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা ছিল। তবে পাকিস্তান পৌঁছেই সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলেন যুবরাজ। এনডিটিভি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপক আর্থিক সংকটে পড়েছে পাকিস্তান। সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানের দিকে অভিযোগের তীর ছুড়েছে ভারত। পাকিস্তানকে দেওয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’-এর (এমএফএন) মর্যাদা প্রত্যাহার করেছে ভারত। শুধু তা-ই নয়, পাকিস্তান থেকে আসা সব পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারত।

জরুরি ভিত্তিতে এই সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ। সে কারণে তারা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। এর মধ্যেই সৌদির সঙ্গে বিশাল অংকের এই চুক্তি দেশটির ভঙ্গুর অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চুক্তির আওতায় পাকিস্তানের বন্দর নগরী গোয়াদারে একটি তেল শোধনাগার তৈরি হবে। যাতে বিনিয়োগ করা হবে ৮০০ কোটি ডলার।

বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ছাড়া বিদ্যুৎ, পেট্রোকেমিকেল, খনিজ খাতসহ বিভিন্ন বিষয়ে চুক্তি ও সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর করেছে দু’দেশ।

সৌদি প্রিন্স বলেন, এটি দুই পক্ষের জন্য একটি বড় অধ্যায়। অবশ্যই এটি প্রতি মাসে এবং প্রতি বছর বৃদ্ধি পাবে। উভয় দেশের জন্য যা উপকারী হবে।

বিশ্বজুড়ে এমবিএস নামেই পরিচিত ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। রোববার পাকিস্তানে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। সৌদি আরবের এই সহায়তার জন্য দীর্ঘদিনের মিত্র দেশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, পাকিস্তান এবং সৌদির মধ্যে বর্তমান সম্পর্ক এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে যা আগে কখনই ছিল না। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করার পর এ পর্যন্ত দু'বার সৌদিতে সফর করেছেন ইমরান খান।

পাকিস্তান সফরের পর ভারতে সফর করবেন ক্রাউন প্রিন্স সালমান। সেখানে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার চীনে সফরের মাধ্যমে তিনি তার ভ্রমণ শেষ করবেন।

বর্তমানে তারল্য সংকটে জর্জরিত পাকিস্তান। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিজার্ভের পরিমাণ মাত্র ৮ বিলিয়ন ডলার। এমন অবস্থায় এই চুক্তির মাধ্যমে সংকট উত্তরণে কিছুটা সমর্থ হবে পাকিস্তান এমনটাই আশা করছেন বিশ্লেষকেরা।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: