অর্ধেক জনবলে চলবে অফিস: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় অর্ধেক লোকবল নিয়ে অফিস পরিচালনার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এ তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় অর্ধেক লোকবল নিয়ে অফিস পরিচালনা করার বিষয়ে প্রতিটি অফিসে আমরা বার্তা দিয়েছি। প্রত্যেকটি অফিস-আদালত অর্ধেক জনবল নিয়ে পরিচালনা করতে হবে।'

শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধসহ পাঁচ দফা নির্দেশনা জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এরপর সংবাদ সম্মেলনে এসে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় অফিস-আদালত অর্ধেক লোক দিয়ে পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই নোটিশও শিগগির দেয়া হবে সংশ্লিষ্টদের। নোটিশ পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’

পরিস্থিতি বুঝে অর্ধেক জনবল দিয়ে অফিস পরিচালনার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে গণপরিবহনে যাতে ভোগান্তি না হয়, সে জন্য অর্ধেক লোক দিয়ে অফিস করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

কয়েকটি জেলায় সংক্রমণের হার ৩০ শতাংশের ওপরে, সেসব জেলায় আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘গোটা দেশের পরিস্থিতি একই রকম। আলাদাভাবে কোনো ধরনের বিধিনিষেধ কার্যক্রম হবে না। যে জেলাগুলোতে সংক্রমণ বেশি বাড়ছে, সেই সব জেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা আলাদাভাবে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।’

কেন করোনা বাড়ছে এমন প্রশ্ন রেখে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানছি না। যে কারণে করোনা বাড়ছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে ১১ দফা স্বাস্থ্যবিধি দেয়া হয়েছে। সে বিধিনিষেধ যদি যথাযথ বাস্তবায়ন হয়, তাহলে কারোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হতো।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সংক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালগুলোতে ৩৩ শতাংশ শয্যা ইতিমধ্যে পূর্ণ হয়েছে। পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে। তাই, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে আগামী দুই সপ্তাহ স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিয়েশাদি, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ১০০ জনের বেশি অংশ নিতে পারবে না এবং সবার টিকা সনদ থাকতে হবে।’

১১ দফা বিধিনিষেধ সবাইকে মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলো কার্যকরের চেষ্টা চলছে। সংক্রমণ যাতে কমে সে জন্য এই সিদ্ধান্ত। পরিবার, দেশে ও নিজের সুরক্ষার জন্য আমাদের নিয়মগুলো মানতে হবে। সরকার বিধিনিষেধ দেন, যাতে আমরা মেনে চলি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে খেলাধুলা আছে সেখানে টিকা সনদের পাশাপাশি টেস্টের সনদও লাগবে। এগুলো বইমেলায়ও দেখাতে হবে। সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে বইমেলা পেছানো হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতোই আমরাও চলমান পরিস্থিতির বাইরে নই।’

নির্দেশনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রশাসনের জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাইব, তারা যেন আরও নজরদারি বাড়ান। জনগণের দায়িত্ব আরও বেশি। নিজেদের সুরক্ষায় এটি নিজেদেরই পালন করতে হবে। সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়।’

Share this news on: