পাটের সঙ্গে স্বাধীনতার নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পাটের সঙ্গে এদেশের মানুষ আর আমাদের মহান স্বাধীনতার এক নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে। রোববার (৬ মার্চ) জাতীয় পাট দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও ৬ মার্চ ২০২২ ‘জাতীয় পাট দিবস’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি পাট চাষিসহ এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। এবারের প্রতিপাদ্য ‘সোনালি আঁশের সোনার দেশ, পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশ’ প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী বলে আমি মনে করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাটের সঙ্গে রয়েছে এদেশের মানুষ আর আমাদের মহান স্বাধীনতার এক নিবিড় যোগসূত্র। দেশ বিভাগের পর থেকেই তৎকালীন পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠী দেশের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হতে অর্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার ন্যায্য হিসাব থেকে আমাদের বঞ্চিত করে। এ অন্যায়, অবিচার ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬৬ সালের ৬ দফা কর্মসূচির পঞ্চম দফায় বৈদেশিক মুদ্রার ওপর প্রদেশ বা অঙ্গরাজ্যগুলোর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দাবি করেন। পাটকে জাতীয় সম্পদ হিসেবে বিকাশের পরিকল্পনা করেন তিনি। এ কারণে দেশ স্বাধীনের পরে ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্টারপ্রাইজ (ন্যাশনালাইজেশন) অর্ডার ১৯৭২ এর আওতায় সব পাটকল জাতীয়করণ করেন।

‘একই বছর তিনি বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি পাট শিল্পের উন্নয়নে পঞ্চবার্ষিক (১৯৭৩-৭৮) পরিকল্পনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরই) প্রতিষ্ঠা করেন। পাটখাত নিয়ে তার গঠনমূলক উদ্যোগের ফলে পাট মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর পাটখাতে নেমে আসে ভয়াবহ বিপর্যয়। লোকসানের কারণ দেখিয়ে নামমাত্র মূল্যে ব্যক্তি মালিকানায় ছেড়ে দেওয়ার নামে পাটশিল্পকে ধ্বংসের মুখে ফেলে দেওয়া হয়।’

সরকারপ্রধান বলেন, এক সময়ের প্রধান অর্থকরী ফসল পাট এখনো দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত। শুধু তাই নয়, বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে পাটের ভূমিকা একটি স্বীকৃত ইতিহাস। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আওয়ামী লীগ সরকারের ধারাবাহিক পৃষ্ঠপোষকতা পাটের হারানো ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার এবং অধিক সমৃদ্ধশালী করতে সক্ষম হয়েছে। বিশ্বব্যাপী পরিবেশের ওপর প্লাস্টিক ও পলিথিনের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি হওয়ায় বিকল্প হিসেবে প্রাকৃতিক তন্তু ব্যবহারের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে পরিবেশবান্ধব সোনালি আঁশ-পাটের বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।

Share this news on:

সর্বশেষ