আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, নারী নির্যাতন দমন আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল যাবজ্জীবন। হঠাৎ আন্দোলন হলো, ধর্ষণ নির্যাতনের সাজা মৃত্যুদণ্ড করতে হবে। সরকার খুব দ্রুত রাজি হলো, কিন্তু আমরা কি দেখছি? আইনের পরিবর্তনেও ধর্ষণ বন্ধ হয়নি। বরং আমরা দেখছি ধর্ষণ আরও বেড়ে গেছে।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২২ এর প্রতিপাদ্য, ‘টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই অগ্রগণ্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ক ন্যাশনাল ইনকোয়ারি খসড়া প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী বলেন, জেন্ডার-ইকুয়ালিটির ক্ষেত্রে অত্যন্ত তৎপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সাড়ে তিন বছরের সেবামূলক শাসনামলে সংবিধান থেকে শুরু করে কার্যক্রমে সমতা বিষয়টি অনুসরণ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এসব অত্যন্ত নির্মম ও দুঃখজনকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর জেন্ডার-ইকুয়ালিটির কাজ আবার শুরু করেন। বঙ্গবন্ধুর যে নির্দেশনা বা ফাউন্ডেশন সেটার ওপরে প্রধানমন্ত্রী কাজ করে যাচ্ছেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা যত আইনই করি না কেন, যতক্ষণ পর্যন্ত বৈষম্য দূরীকরণ না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কিন্তু আমরা জেন্ডার-ইকুয়ালিটির কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব না। আবার এটা রাতারাতিও সম্ভব না। এজন্য প্রধানমন্ত্রী একটি সোস্যাল সেফটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেছেন, বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা চালু করেছেন।
সম্পদের সমবণ্টন ও উত্তরাধিকার প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, জেন্ডার-ইকুয়ালিটির ক্ষেত্রে, সম্পদের সমান বণ্টনের ক্ষেত্রে ধর্ম একটা প্রতিবন্ধকতা এটা আমার মনে হয় না। আমরা সবাই চিন্তাভাবনা করলে এমন ভাবনা থেকে বের হয়ে আসতে পারব। কারণ ইসলাম ধর্ম বা অন্য যে কোনো ধর্ম সম্পদের বণ্টনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না।
মন্ত্রী বলেন, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গি ও মনোভাব। সেটা পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও বদলাতে হবে। আমার মনে হয়, পাশাপাশি যদি দুটোকে রেখে অর্থাৎ বৈষম্য দূরীকরণ ও মানসিকতার পরিবর্তন হয় তাহলে আমরা আশাব্যঞ্জক পরিবর্তন দেখতে পাবো।