জেলে থাকতে রাজি, বাংলাদেশে নয়!

সিরিয়ায় বন্দি জীবনে থাকা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ফার্মাসিস্ট মোহাম্মদ আনোয়ার মিয়া বাংলাদেশে আসার পরিবর্তে যুক্তরাজ্যের জেলে থাকতে চান।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ৪০ বছর বয়সী আনোয়ার বলেছেন, আমি যে কোনো শর্তে যুক্তরাজ্যে ফিরে যেতে চাই। আমি কেবল ব্রিটেনেরই নাগরিক। আমি জীবনে দুই কি তিনবার বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। বাংলাদেশে পাঠানোর বদলে আমি বরং জেলখানায় থাকতে রাজি।

আনোয়ার ব্রিটেনে জন্মগ্রহণ করলেও তার মা জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশি। মাকে তিন সপ্তাহের জন্য বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে ২০১৪ সালে সিরিয়ার উদ্দেশ্যে যুক্তরাজ্য ছাড়েন তিনি। এর আগে বার্মিংহামে ভুয়া কর্মীর নামে বেশি কর্মঘণ্টা কাজ করে বাড়তি টাকা আয়ের অভিযোগে তার ফার্মাসিস্ট লাইসেন্স বাতিল করা হয়।

সাক্ষাৎকারে আনোয়ার বলেন, সিরিয়াতে আইএস তার নতুন নাম দিয়েছে আবু ওবাইদা আল-ব্রিটানিয়া। চারবছর আইএসের অধীনে মায়াদিন শহরে অর্থোপেডিক সার্জন হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।

আনোয়ার নিজেকে অসহায় দাবি করে বলেন, তিনি কখনোই আইএস এর অনুগত ছিলেন না। তিনি অবৈধভাবে সিরিয়া গিয়েছিলেন ‘মানবিক কারণে’। ২০১৮ সালের আগস্টে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আর ৯ মাসের মেয়েকে নিয়ে সিরিয়া থেকে পালাতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ইরাক সীমান্তের কাছে কুর্দি বাহিনীর হাতে আনোয়ার ও তার পরিবার ধরা পড়ে যায়।

এসময় তার স্ত্রী ও মেয়েকে অনত্র সরিয়ে নিয়ে তাকে বন্দি করা হয়। পরিবারের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন আনোয়ার জানেন না তার স্ত্রী সন্তানরা এখন কোথায় আছে। কিন্তু তার দাবি, তার সন্তানরা বাবার সূত্রে ব্রিটিশ নাগরিক, তাদের নিয়ে তিনি ব্রিটেনে ফিরে যেতে চান।

কখনও কোনো অপরাধে জড়াননি দাবি করে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমি পাবলিকের জন্য হুমকি নই। কিন্তু তারা যদি আমাকে নিয়ে ভয় পায়, পুনর্বাসন কেন্দ্রে যেতেও আমার আপত্তি নেই। তারা যদি আমাকে শাস্তি দিতে চায়, তাতেও আমি রাজি। তারা যদি বলে যে আমাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে, তাতেও আমি রাজি।

উল্লেখ্য, সিরিয়ায় শরণার্থী শিবিরে থাকা শামীমা বেগম নামের আরেক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ কিশোরী সম্প্রতি তার সন্তানকে নিয়ে লন্ডনে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, যিনি ২০১৫ সালে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন আইএসে যোগ দেওয়ার জন্য।

কিন্তু যুক্তরাজ্য সরকার তার আবেদনে সাড়া না দিয়ে উল্টো তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার নোটিস পাঠিয়েছে।

 

টাইমস/এএস

Share this news on:

সর্বশেষ