চা শ্রমিকদের ধর্মঘট নিরসনে বৈঠক আজ

দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের ১৬৬টি চা বাগানের ২৩২টি ফাঁড়ি বাগানে চলমান ধর্মঘট নিরসনে চা শ্রমিক ও বাগান মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বাংলাদেশ শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী। এ জন্য আজ মঙ্গলবার তিনি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আসবেন।

এ বিষয়ে বিভাগীয় শ্রম দফতর শ্রীমঙ্গলের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুর ইসলাম জানান, মহাপরিচালক শ্রীমঙ্গলে এসে প্রথমে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বসবেন। তাঁদের দাবি দাওয়া নিয়ে বাগান মালিকদের সঙ্গেও কথা বলবেন। এখন যেহেতু ধর্মঘটের কারণে দুই পক্ষের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তাই শুরুতেই দুই পক্ষকে নিয়ে একসঙ্গে বসে সমস্যার সমাধান কঠিন হবে। ইতিমধ্যেই উভয়পক্ষকে মহাপরিচালকের সঙ্গে বসার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। শ্রম অধিদফতরের সর্বোচ্চ ব্যক্তি যেহেতু আসছেন বিষয়টি সমাধান হবে।’ গত মঙ্গলবার থেকে চা বাগানের শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে ৪ দিন কর্মবিরতি ও গত শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছেন চা শ্রমিকেরা।


এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নিপেন পাল জানান, ‘যেহেতু মহাপরিচালক আমাদের সঙ্গে বসে চলমান আন্দোলনের একটি সমাধান করতে চাচ্ছেন, আলোচনায় রাজি আছি আমরা। তবে কর্মসূচি অনুযায়ী চলবে আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন। আমরা ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে সেখানে যাব।’
তিনি আরো জানান, ‘আমাদের শ্রমিকেরা কী কঠিন অবস্থায় আছে, সেটি অবশ্যই দেখতে হবে সরকার ও মালিকপক্ষকে। চা বাগানের শ্রমিকদের খাদ্যের অভাব, ভালো চিকিৎসার অভাব, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার অভাব। ঘরে ঘরে শ্রমিকদের কষ্ট। আমরা এর একটি ভালো সমাধান চাই। ২০২২ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশে এসে আমরা দাসত্বের জীবন কাটাতে চাই না। আমাদের দাবি নিয়ে সুন্দর সমাধান পেলে আন্দোলন প্রত্যাহার করব আমরা। কিন্তু দাবি না মানা হলে কঠোর আন্দোলনে নামব।’


কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা এই জানান, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে চা শ্রমিকেরা অনেক কষ্টে দিন যাপন করছেন। ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে কিছুই হয় না। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু মালিকপক্ষ এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো আশ্বাস দেয়নি। আমরা বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাতটি ভ্যালি থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। আমরা সারাজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে চলেছি, নৌকাকে ভোট দিয়েছি। আমাদের এ কঠিন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ভালো একটি সমাধান চাই।’

Share this news on: