মিয়ানমারে শরণার্থী হয়ে থাকতে রাজি না রোহিঙ্গারা

প্রত্যাবাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো মিয়ানমারের মংডু এলাকা পরিদর্শন করেছে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

সেখানকার পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখে শুক্রবার (৫ মে) বিকেল সাড়ে ৫ টায় তারা টেকনাফ জেটি ঘাটে ফেরে।

২০ রোহিঙ্গার মধ্যে মো. সেলিম ও আবু সুফিয়ান নামে দুইজনকে প্রেস ব্রিফিংয়ের সুযোগ দেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার। তারা বলেন, মিয়ানমার সরকারের প্রতিনিধি দলকে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়। তারা আমাদের জানিয়েছেন প্রথমে আমাদের ক্যাম্পে রাখা হবে। পরে যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী সুযোগ-সুবিধা দেবেন। আমরা ক্যাম্পে থাকতে চাই না। আমাদের ভিটেমাটি ও নাগরিকত্ব দেওয়া না হলে মিয়ানমারে ফিরব না।

এ বিষয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, মিয়ানমার সরকারের প্রতিনিধি দল বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে ঘুরে দেখিয়েছেন। সেখানে হাজার হাজার রোহিঙ্গা ব্যবসা বাণিজ্য করছে। প্রত্যাবাসনের বিষয়টি ৫০-৬০ বছরের সমস্যা। একদিনে সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। আগে আমরা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চাই। পরে পর্যায়ক্রমে সব সমাধান হবে।

এর আগে, সকাল ৯ টার দিকে রাখাইন রাজ্যের সার্বিক পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূলে কি না দেখতে মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন ২৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। এতে তিন নারীসহ ২০ রোহিঙ্গা, একজন অনুবাদক এবং বিভিন্ন দপ্তরের বাংলাদেশি ছয়জন কর্মকর্তা ছিলেন। পাশাপাশি তাদের নিরাপত্তার জন্য দুটি বিজিবির স্পিডবোটসহ ১৬ বিজিবি সদস্যও ছিলেন।

এর আগে ১৫ মার্চ টেকনাফ হয়ে বাংলাদেশে আসে মিয়ানমার সরকারের ১৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। তারা বাংলাদেশে আশ্রিত বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের দেওয়া রোহিঙ্গাদের তালিকা যাচাই-বাছাই করেন। প্রতিনিধি দলটি টানা সাতদিন টেকনাফের স্থলবন্দর রেস্ট হাউজে অবস্থান করে বাংলাদেশে আশ্রিত ১৪৭ রোহিঙ্গা পরিবারের মোট ৪৮৬ জনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন। আর তাদের দেওয়া বক্তব্য রেকর্ড করেন। ২২ মার্চ সকালে প্রতিনিধি দলটি নাফ নদী পার হয়ে মিয়ানমারে ফিরে যায়। ওইসময় মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যাদের প্রত্যাবাসন করা হবে সেসব রোহিঙ্গা যাতে আগে থেকে রাখাইনের সার্বিক পরিবেশ স্বচক্ষে দেখে আসতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। তারই ধারাবাহিকতায় রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল শুক্রবার রাখাইন যায়।

এর আগে, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আসা শুরু হয়। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেয়। এ ছাড়া আগে থেকে ওই এলাকার ক্যাম্পে বসবাস করছিলেন আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় শীর্ষে ঢাকা May 09, 2024
img
সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার রায় আজ May 09, 2024
img
৫ ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক May 09, 2024
img
প্রথম ফ্লাইটে সৌদি গেলেন ৪১৩ জন হজযাত্রী May 09, 2024
img
প্রকৌশলীদের নিরলস পরিশ্রমেই ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন দৃশ্যমান : প্রধানমন্ত্রী May 09, 2024
img
বগি লাইনচ্যুত: ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ May 09, 2024
img
প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী হলেন যারা May 09, 2024
img
ধান কাটা, ঝড়-বৃষ্টির কারণে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল, তবে সন্তোষজনক : ওবায়দুল কাদের May 08, 2024
img
২৩ ফুট লম্বা শাড়ির আঁচলে রূপকথার পরী আলিয়া! May 08, 2024
img
সাকিব-সৌম্য-মুস্তাফিজকে নিয়ে বাংলাদেশের দল ঘোষণা May 08, 2024