নর্দ্দায় বাসের আগুন থামাল বিক্ষোভরত ছাত্ররা

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরীর বাসচাপায় মৃত্যুর পর ঢাকার নর্দ্দায় যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। তাদের বিক্ষোভের মধ্যে সু-প্রভাতের একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে দুজন অছাত্র। পরে বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্ররা আগুন নেভায়। মঙ্গলবার সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

বিইউপির দুজন ছাত্র জানান, বাসটিতে দুই ব্যক্তি আগুন দেন। তারা বিইউপির ছাত্র নয়। পরে ছাত্ররা ধাওয়া দিলে একজন পালিয়ে যায়। আরেকজনকে ধরে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তবে তার নাম জানা যায়নি।

ছাত্রদের বক্তব্য, দাবি আদায়ে তারা অহিংস আন্দোলন করছে। সেখানে পরিস্থিতি ভিন্নখাতে নিতে পরিকল্পিতভাবে সু-প্রভাত বাসে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আগুনে বাসের দুটি সিট পুড়ে গেছে। বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরাই বাসটির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

বিক্ষোভের এক পর্যায়ে সকাল ১০টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র আতিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময়  শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বেশকিছু দাবি তুলে ধরা হয় মেয়রের কাছে। তার আশ্বাসেও শিক্ষার্থী রাস্তা ছাড়েননি।

সকাল ৭টা ১০ মিনিটের দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেইটে একই কোম্পানির আরেকটি বাসের চাপায় মারা যান আবরার। ওই বাস এবং চালককে আটক করেছে পুলিশ।

আবরারের মৃত্যুর খবর পেয়ে বিইউপির শিক্ষার্থীরা যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের সড়ক অবরোধ করে দোষী চালকের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।

তাদের অবরোধের কারণে বাড্ডা নতুনবাজার থেকে কুড়িলের পথে দুই দিকেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা এ সময় কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুরও করেন। দুপুর আড়াইটায়ও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলছিল।

শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে রয়েছে- আবরারকে চাপা দেওয়া বাসের চালককে ১০ দিনের মধ্যে ফাঁসি দিতে হবে, সুপ্রভাত বাসের রুট পারমিট বাতিল, সিটিং সার্ভিস বন্ধ, স্টপেজের ব্যবস্থা করা, চালকদের ছবি ও লাইসেন্স গাড়িতে ঝোলানোর ব্যবস্থা করা, বসুন্ধরা গেইটে ফুটওভার ব্রিজের ব্যবস্থা করা, প্রতিটি জেব্রা ক্রসিংয়ে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা এবং ট্রাফিক পুলিশের দুর্নীতি বন্ধ করা।

শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে মেয়র আতিকুল বলেন, ‘৭ দিন হয়েছে আমি দায়িত্ব নিয়েছি।  আমি মেয়র নই, ভাই হিসেবে বলছি আমাকে সময় দেন।’

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোকে ‘যৌক্তিক’ উল্লেখ করে তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তোমরা আমার সঙ্গে থাকলে আমি সব সমস্যার সমাধান করে ফেলব।  বাসের মালিক ও সংশ্লিষ্টদের নিয়মের ভেতরে আনা হবে। ঢাকা সিটিতে ছয়টি কোম্পানির বাস চালানো হবে। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সমাধান করব।’

সুপ্রভাত বাসের চালকের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি। দুই-তিন মাসের মধ্যে নিহত আবরারের নামে বসুন্ধরা গেইটে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে  বলেও জানান তিনি। এরপর মেয়র রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করলে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তাদের তোপের মুখে এক পর্যায়ে সেখান থেকে চলে যান মেয়র।

 

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: