ফেনীতে পরীক্ষা কেন্দ্রে মাদ্রাসাছাত্রীকে পেট্রল ঢেলে হত্যার চেষ্টা

শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করায় এক মাদ্রাসাছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে সহপাঠীদের বিরুদ্ধে। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে মেয়েটির গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।

দগ্ধ ছাত্রীর নাম নুসরাত জাহান রাফি (১৮)। তিনি সোনাগাজী পৌরসভার চরচান্দিয়া গ্রামের একেএম মুসার মেয়ে এবং আলিম পরীক্ষার্থী।

ছাত্রীর ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, আজ সকালে আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা ছিল। তিনি বোনকে নিয়ে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান। ওই সময় কয়েকজন ছাত্র ও অফিস সহকারী মো. মোস্তফা তাকে মাদ্রাসায় ঢুকতে বাধা দেন। পরে তিনি বোনকে দিয়ে চলে যান।

বোনের বরাত দিয়ে নোমান বলেন, মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার পক্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে যান। তারা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তুলে নিতে তাকে চাপ দেন। এ সময় তিনি কিছু না বলায় তিনজন শিক্ষার্থী তার হাত ধরে, একজন তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান। তার চিৎকারে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠান।

সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নুরুল আলম জানান, ওই ছাত্রীর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালের প্রেরণ করা হয়েছে।

ফেনী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবু তাহের জানান, ছাত্রীর শরীরের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। এর আগে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয় হবে।

গত ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে মাদ্রাসার নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেন অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অধ্যক্ষ এখনো কারাগারে আছেন। ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। আরেকটি অংশ অধ্যক্ষের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন।

 

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: