চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ-ছাত্রলীগ সংঘর্ষ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখা ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গ্রেপ্তার ৬ কর্মীর মুক্তিসহ চার দফা দাবিতে ছাত্রলীগের চলা ধর্মঘটের মধ্যে এ ঘটনা ঘটছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে।

রোববার দুপুর ১২টার দিকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এর আগে রোববার সকালে চারদফা দাবিতে ছাত্রলীগের কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে তালা লাগিয়ে দেয়। এছাড়া শাটল ট্রেনের লোকোমাস্টারকে (চালককে) তুলে নিয়ে যায় এবং কয়েকটি বগির হোস পাইপ কেটে দেয়। ফলে সকাল থেকেই বন্ধ রয়েছে ট্রেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ও দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রোববার সকাল সাড়ে সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়গামী শাটল ট্রেনের হোস পাইপ কেটে দেয় অবরোধকারীরা। এদিকে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে সোহরাওয়ার্দী হলের মোড় পর্যন্ত ব্যারিকেড দিয়ে রাখে তারা। পরে পুলিশ এসে ব্যারিকেড সরিয়ে দেয়।

এদিকে দুপুর ১২টার আগে অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়। কর্তৃপক্ষের এই আহ্বানে সাড়া দেয়নি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। পরে পুলিশ এসে তাদের উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে অবরোধকারী ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মূল ফটক থেকে সরে ছাত্রলীগ কর্মীরা শাহ আমানত ও সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে অবস্থান করছে। সেখান থেকেই তারা পুলিশের উদ্দেশে ইটপাটকেল ছুড়ছে। পুলিশও টিয়ারশেল ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।

সংঘর্ষের সময় পুলিশের এক কনস্টেবল ও ছাত্রলীগের তিনজন আহত হয়েছেন। তাদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশের ওসি মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, শাটল ট্রেনের একজন লোকো মাস্টারকে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর শুনেছি। তাকে উদ্ধারে আমরা চেষ্টা করছি। শাটল ট্রেন বন্ধ রয়েছে।

অবরোধের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর জীবন বলেন, মিথ্যা অস্ত্র মামলা দিয়ে আমাদের কর্মীদের ফাঁসানো হয়েছে। তাই অবরোধের ডাক দিয়েছি। উপাচার্য আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

হাটহাজারী থানার ওসি বেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।

ছাত্রলীগের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- গ্রেফতার ছয় ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরীর পদত্যাগ, হাটহাজারী থানার ওসি বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীরকে প্রত্যাহার, ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রশাসন কর্তৃক যেসব মিথ্যা মামলা করা হয়েছে তা প্রত্যাহার।

প্রসঙ্গত, ৩১ মার্চ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওইদিন দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পাঁচটি আবাসিক হলে তল্লাশি চালায় পুলিশ। এসময় দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১২৮ রাউন্ড গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। পরের দিন (১ এপ্রিল) ফের উভয় গ্রুপ সংঘর্ষে জড়ালে ঘটনাস্থল থেকে ছয় জনকে আটক করে পুলিশ। পরে ৩ এপ্রিল আটক ছাত্রলীগ কর্মীদের দেশীয় অস্ত্র মামলায় কোর্টে চালান দেয় হাটহাজারী থানা পুলিশ।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on:

সর্বশেষ