বিক্রমজিৎ সিং ও সাইব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট বাংলাদেশের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে উঠেছিলেন। মাহমুদউল্লাহ আনেন প্রথম ব্রেকথ্রু, ফেরান বিক্রমজিৎকে। তারপর এঙ্গেলব্রেখট মারকুটে ব্যাটিংয়ে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ান। ১৫তম ওভারে রিশাদ হোসেন বল হাতে নিয়ে ম্যাচের গতি পাল্টে দেন। ব্যাকফুটে থাকা বাংলাদেশকে উচ্ছ্বাসে ভাসান তিনি। ওই ওভারে এঙ্গেলব্রেখটকে আউট করেন, এক বল বিরতি দিয়ে স্টাম্পিং হন বাস ডি লিড। সাকিব আল হাসান মাত্র ৫ রান দেন।
মোস্তাফিজুর রহমান মাত্র ১ রান দিয়ে এক উইকেট নেন। রিশাদ ফিরেই আরেকটি উইকেট নেন। ৩ উইকেটে ১১১ রান করা নেদারল্যান্ডস ১১৭ রান করে ৭ উইকেট হারিয়ে। বাংলাদেশের জয় তখন সময়ের ব্যাপার।
শেষ দুই ওভারে লাগতো ৩৬ রান। মোস্তাফিজ ১৯তম ওভারে দিলেন মাত্র ৩ রান। তাসকিন আহমেদকে চতুর্থ বলে চার মারলেও তা শুধু ব্যবধানই কমিয়েছে। বাংলাদেশি পেসার শেষ বলে টিম প্রিঙ্গলকে বোল্ড করেন। ৮ উইকেটে ১৩৪ রানে ডাচদের থামিয়ে ২৫ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে দুটি জিতে সুপার এইটে এক পা দিয়ে রাখলো বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচ তারা খেলবে নেপালের বিপক্ষে।
আজ কিংসটনে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৬৪ রান করেন সাকিব। তাছাড়া ৩৫ রান এসেছে তানজিদ তামিমের ব্যাট থেকে। জবাবে খেলতে নেমে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রানের বেশি করতে পারেনি নেদারল্যান্ডস।
বাংলাদেশের দেয়া টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৩২ রানে দুই উইকেট হারায় ডাচরা। তৃতীয় উইকেটে বিক্রমজিতকে নিয়ে সেই ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টা চালান এঙ্গেলব্রেখট। দলীয় ৬৯ রানে বিক্রমজিত আউট হলে ভাঙে জুটি। চতুর্থ উইকেটে এঙ্গেলব্রেখট ও অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস উইকেট আটকে রেখে রানের চাকা সচল রাখেন। এ দু’জন ৪৪ রান সংগ্রহ করার পর এঙ্গেলব্রেখটকে রিশাদ প্যাভিলিয়নের পথ দেখান। পরের বলেই বাস ডি লিডকেও তুলে নেন রিশাদ। এতে করে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে ডাচরা।
শেষ দিকে জোর চেষ্টা চালালেও তা আর জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। ৮ উইকেট হারিয়ে নেদারল্যান্ডস শেষ পর্যন্ত ১৩৪ রান করতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশের হয়ে রিশাদ ৩টি, তাসকিন ২টি ও মুস্তাফিজ, তানজিম, মাহমুদউল্লাহ প্রত্যেকে একটি করে উইকেট লাভ করেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই আরিয়ান দত্তকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শান্ত। ৩ বলে ১ রান করেন টাইগার অধিনায়ক। শান্তর বিদায়ের পর উইকেটে এসে দ্রুতই ফেরেন আরেক টপঅর্ডার ব্যাটার লিটন দাস। এই উইকেটও তুলে নেন আরিয়ান। নিজের খেলা দ্বিতীয় বলে আরিয়ানকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন। ২ বলে ১ রান করেন তিনি।
দলীয় ২৩ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দায়িত্ব কাঁধে তুলে সাকিব এবং তানজিদ তামিম। ৩২ বলে ৪৮ রানের দুর্দান্ত এই জুটি ভাঙে দলীয় ৭১ রানে তানজিদ তামিম ৩৫ রান করে সাজঘরে ফেরায়। নবম ওভারে ফন মিকেরেনের বলে ক্যাচ হয়ে ফেরেন তানজিদ। এরপর বাইশগজে ব্যাট হাতে আসেন তাওহিদ হৃদয়।
তাকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন সাকিব। তবে ব্যক্তিগত ৯ রানে হৃদয় আউট হলে ভাঙে এই জুটি, তখন দলীয় রান ৮৯। এরপর মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে এগুতে থাকেন সাকিব। একই সঙ্গে নিজের অর্ধশতকও তুলে নেন টাইগার অলরাউন্ডার। এটি ছিল সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফসেঞ্চুরির ইনিংস। ৫ম উইকেটে রিয়াদ ও সাকিব ৪১ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ১৩০ রানে ২১ বলে ২৫ করে আউট হন রিয়াদ।
শেষ দিকে জাকের আলীর অপরাজিত ১৪ রানের ক্যামিও ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব। নেদারল্যান্ডসের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ দুই উইকেট নেন আরিয়ান দত্ত ও পল ফন মিকিরেন।