কারাগারে এফআর টাওয়ারের দুই মালিক

বনানীর পুড়ে যাওয়া ভবন এফআর টাওয়ারের দুই মালিক এস এম এইচ আই ফারুক ও তাসভীর-উল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

ভবনে অগ্নিকাণ্ডের পর নির্মাণে নানা অনিয়ম বেরিয়ে আসার পর গত ৩০ মার্চ এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরীর আদালতে হাজির করা হয় তাসভীর ও ফারুককে।

মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে রাখার আবেদন জানান তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক জালাল উদ্দিন।

ফারুক ও তাসভীরের পক্ষে জামিনের আবেদন হলেও তা নাকচ করে দুজনকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন হাকিম আহসান চৌধুরী।

বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে যেখানে ২৩ তলা এফআর টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে, সেই জমির মূল মালিক ছিলেন প্রকৌশলী ফারুক। অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ভবনটি নির্মাণ করে রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেড। সে কারণে সংক্ষেপে ভবনের নাম হয় এফআর টাওয়ার।

আধাআধি ভাগ হলেও রূপায়ন পরে বিভিন্ন ফ্লোর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে দেয়। এর মধ্যে ২১, ২২ ও ২৩ তলার মালিকানা রয়েছে প্রযুক্তি খাতের কোম্পানি কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের হাতে।

কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সভাপতি তাসভীর এই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনিই এফআর টাওয়ারের পরিচালনা কমিটির সভাপতি।

গত ২৮ মার্চ ভবনে আগুন লেগে ২৬ জনের মৃত্যুর পর জানা যায়, ১৮ তলার অনুমোদন নিয়ে ভবনটি ২৩ তলা করা হয়েছিল এবং অগ্নি নিরাপত্তার যথাযথ ব্যবস্থাও সেখানে ছিল না।

তখন বনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিল্টন দত্ত গত ৩০ মার্চ থানায় একটি মামলা করেন, যাতে ফারুক ও তাসভীরের পাশাপাশি রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুলকেও আসামি করা হয়।

মামলায় ‘অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে মানুষের জানমালের ক্ষতি করা, অবহেলার ফলে মৃত্যু সংঘটন, তাচ্ছিল্যপূর্ণ কার্যকলাপের ফলে অপরাধজনক অগ্নিকাণ্ডে মানুষের প্রাণহানি, মারাত্মক জখমসহ সম্পদের ক্ষতি’ করার অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে।

 ওই মামলায় সাতদিন জিজ্ঞাসাবাদের পর ফারুক ও তাসভীরকে আদালতে নেয় পুলিশ।

শুনানিতে আসামি পক্ষের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, তাসভীর অগ্নিসংযোগ করেননি বা তার কোনো অবহেলাও ছিল না। কারও আর্থিক ক্ষতি সাধনের প্রশ্নও তার ক্ষেত্রে নেই। তিনি ভূমির মালিকও নন। তার ওপর ভবনের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্বও নেই।

তাসভীরের অসুস্থতার বিষয়টি তুলে ধরে তাকে জামিন দিতে আবেদন জানান তার এই আইনজীবী।

ফারুকের পক্ষে অ্যাডভোকেট তুহিন হাওলাদার বলেন, যিনি জমির মালিক, তার দায়-দায়িত্ব তখনই শেষ হয়, যখন ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়। তখন সমস্ত দায়-দায়িত্ব ডেভেলপার কোম্পানির। ২০০৮ সালের ওই ভবনে প্রথম অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তখন ফারুক ওই ভবনে অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা নেই জানিয়ে থানায় জিডিও করেছিলেন।

জামিন আবেদন নাকচ করলেও আসামিদের আবেদনে তাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে আদেশ দেন হাকিম আহসান।

 

 

টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ