স্ত্রী-ই চালাতেন এই অভিনেতার সংসার

বড় পর্দা হোক কিংবা ওয়েব সিরিজ, এক ঘণ্টা হোক বা পাঁচ মিনিট, তিনি থাকা মানেই অসাধারণ অভিনয়, এ নিয়ে দ্বিমত পোষণ করবেন না কেউই। তার অভিনয় দেখেই শুধু ভালোবাসছেন? তার বাস্তব জীবনের গল্প শুনলে আরও ভালোবেসে ফেলবেন বলিউড অভিনেতা পঙ্কজ ত্রিপাঠীকে।

পঙ্কজ আর তার স্ত্রীর প্রেমের গল্প। প্রায় ১৪ বছরের বিবাহিত জীবন তাদের। একটি মেয়েও রয়েছে। কীভাবে আলাপ হলো কলকাতার মেয়ের সঙ্গে বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামের এক যুবকের?

কিশোর বয়সে গ্রামের নাটকে মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করতেন তিনি, কৃষ্ণের চরিত্রেও অভিনয় করেছিলেন। তখনই ঠিক করেছিলেন, গ্রামে যে রকম দেখেন, লোকজন পণ নিয়ে বিয়ে করে, তেমনটা করবেন না। নিজের পছন্দে ভালোবেসে বিয়ে করবেন। কতই বা বয়স তখন তার? বড় জোর ১৩।

পঙ্কজ জানান, ১৯৯৩ সালের এক শুক্রবার স্ত্রী মৃদুলাকে প্রথম বার দেখেন তিনি। প্রথম দর্শনেই প্রেম। পঙ্কজ তখন ১৭। বোনের বিয়েতে বারান্দা থেকে এক ঝলক চোখে পড়েছিল বরযাত্রীদের দলের একটি মেয়েকে।

পঙ্কজ ঠিক করে নেন, ওই মেয়েটিকেই বিয়ে করবেন। আলাপ হলো বিয়েবাড়িতে। বাড়ল ঘনিষ্ঠতা। পঙ্কজ এরপর পড়তে গেলেন দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায়। মৃদুলা নামের সেই মেয়েটি তখন কলকাতায় পড়াশোনা করছেন।

ডেটিং শব্দটাই জানতেন না তখন, বলেন পঙ্কজ। পঙ্কজের বোন জামাইয়ের দিকের আত্মীয় মৃদুলা। কলকাতা থেকে দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা (এনএসডি)-তে ১০ দিন অন্তর শুরু হলো পরস্পরকে চিঠি লেখা। আর ঠিক রাত ৮টায় ফোন, দিনে একবারই।

২০০৪ সালে পঙ্কজের সঙ্গে বিয়ে হয় মৃদুলার। কিন্তু ১২ বছরের লং ডিস্ট্যান্স প্রেম, তাও বোনজামাইয়ের আত্মীয়ের সঙ্গে, একেবারেই মেনে নেয়নি গোঁড়া ব্রাহ্মণ পঙ্কজের পরিবারের সদস্যরা। বিস্তর ঝামেলা পেরিয়ে বিয়ে তো করলেন, কিন্তু কী খাবেন?

এনএসডি থেকে পাশ করা অভিনেতা যে প্রথমে তেমন কাজ পান না, পেলেও ছোটখাটো চরিত্রে। হাল ধরলেন মৃদুলা। শিক্ষিকা মৃদুলাই শুরু করলেন সংসার চালানো, সন্তান প্রতিপালন, পঙ্কজের পরিবারকে নিজের টাকায় বেড়াতে নিয়ে যাওয়া। মৃদুলা বলেছিলেন, পঙ্কজ নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করলেই তিনি খুশি। অর্থ যা লাগবে, তিনি দেখে নেবেন।

২০০৪ সালের পর ২০১২ সালে ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর’ চিনল পঙ্কজকে, মৃদুলা একা সংসার টেনেছেন, সাক্ষাৎকারে পঙ্কজ জানান এমনটাই। পঙ্কজ বলেন, প্রথাগত দিক থেকে ‘ম্যান অব দ্য হাউস’ মৃদুলাই।

এখন পঙ্কজ অনেকটাই পরিচিত। বিখ্যাত অভিনেতাদের মধ্যেই পড়েন তিনি। কিন্তু খুব যে বেশি কাজ পান তা তো নয়। মৃদুলাই আর্থিক দিক থেকে সবচেয়ে বড় ‘সাপোর্ট সিস্টেম’, জানান পঙ্কজ। ভালোবেসে দিব্যি রয়েছেন তারা এক সঙ্গে।

 

 

 টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ