ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির শরীরে আগুন দেয়ার মামলায় অবহেলার কারণে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া ফেনীর সোনাগাজী থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন ঢাকার একজন আইনজীবী। 

সোমবার সাইবার আদালতে মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করেছেন সৈয়দ সায়েদুল হক নামে এক আইনজীবী। দুপুরে এ বিষয়ে শুনানি হয়েছে, আদেশ পরে দেবেন বলে জানিয়েছেন বিচারক।

সংশ্লিষ্ট আদালতের পেশকার শামীম আহম্মেদ এ তথ্য জানিয়েছেন।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের মামলা তুলে না নেয়ায় গত ৬ এপ্রিল কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় নুসরাতের গায়ে। নুসরাতকে আগুনে পোড়ানোর মামলার আসামিদের ধরতে গড়িমসির অভিযোগ ওঠার পর ১০ এপ্রিল মোয়াজ্জেম হোসেনকে সোনাগাজী থানার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে বদলি করা হয়।

ওই দিন রাতেই ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নুসরাত। পরদিন ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, থানায় ওসির সামনে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরতে গিয়ে অঝোরে কাঁদছিলেন নুসরাত।

নুসরাত তার মুখ দুই হাতে ঢেকে রেখেছিলেন। সে সময় ওসি মোয়াজ্জেম ‘মুখ থেকে হাত সরাও, কান্না থামাও’ বলার পাশাপাশি তিনি এও বলেন, ‘এমন কিছু হয়নি যে এখনও তোমাকে কাঁদতে হবে’।

ওই ভিডিও ধারণের জন্য ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন আইনজীবী সায়েদুল হক।

আরজিতে বলা হয়েছে, গত ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে অধ্যক্ষ শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে দুজনকে থানায় নিয়ে যান ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। ওসি নিয়ম ভেঙে জেরা করতে নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন। মৌখিক অভিযোগ নেয়ার সময় দুই পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া এই ভিডিও নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরা। তাদের মতে, ভিকটিমের এ ধরনের ভিডিও ধারণ অপরাধের মধ্যে পড়ে। অভিযোগকারীর বক্তব্য কেউ আইন না মেনে ভিডিও করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা। তবে এ বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা মোয়াজ্জেমের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: