নির্বাচন কমিশনকে ঘুমিয়ে না থাকতে ধমক ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের

ভারতের নির্বাচন কমিশনকে ঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য ধমক দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। চলমান লোকসভা নির্বাচনে লাগাতার বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করে চলেছেন রাজনীতিকরা। তা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ না করায়, সোমবার কড়া অবস্থান নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

রাজনীতিকদের বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যের জেরে ভোটের আগে যেভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিবেশ, সেখানে নির্বাচন কমিশনের করণীয় অনেক কিছুই রয়েছে বলে মনে করে আদালত। অথচ এখন পর্যন্ত সেরকম কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি তাদের। তাই আদালতের  প্রশ্ন, এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা নির্বাচন কমিশনের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে, নাকি ঘুমানো? যদিও নির্বাচন কমিশন জানায়, তাদের হাতে ক্ষমতা সীমিত।

আনন্দবাজার জানায়, নির্বাচনী আচরণ বিধির তোয়াক্কা না করে গত কয়েকদিনে একাধিক রাজনীতিবিদ বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিয়েছেন জনমানসে। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি শীর্ষ আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন হরপ্রীত মনসুখানি নামের এক প্রবাসী ভারতীয়। তাতে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের নিয়ে একটি কমিটি গড়ার আর্জি জানান তিনি, যাতে গোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নজর রাখা যায়। আবার খতিয়ে দেখা যায় নির্বাচন কমিশনের অবস্থানও।

সোমবার হরপ্রীত মনসুখানির আবেদনটির শুনানি করছিল প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। সেখানেই নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। যদিও কমিশনের তরফে সাফাই দিয়ে বলা হয়, ‘এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের  ক্ষমতা সীমিত। বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যের জন্য আমরা কাউকে নোটিশ দিতে পারি। চেয়ে পাঠাতে পারি জবাবদিহি। কিন্তু কোনো দলের স্বীকৃতি বাতিল করার অধিকার নেই আমাদের। কোনো প্রার্থীর মনোনয়নও বাতিল করতে পারি না। শুধুমাত্র সতর্কতা জারি করতে পারি আমরা। ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে বড় জোর অভিযোগ দায়ের করতে পারি।’

নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে সম্প্রতি বিতর্কিত মন্তব্য করেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বিরোধীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা আলিকে বিশ্বাস করেন। আমাদের বিশ্বাস বজরঙ্গবলিতে।’

অন্যদিকে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বহুজন সমাজ পার্টি নেত্রী মায়াবতী আবার সহরানপুর ও বরেলির জনসভা থেকে ভোট ভাগাভাগি নিয়ে মুসলিমদের উদ্দেশে বার্তা দেন। দুজনকেই নোটিশ ধরায় নির্বাচন কমিশন। তারপর আর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন আদালতে জানায়, ১২ এপ্রিলের মধ্যে জবাব দিতে হবে বলে মায়াবতীকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত বহুজন সমাজবাদী পার্টির নেত্রীর লিখিত জবাব হাতে পাননি তারা।

কিন্তু নির্বাচন কমিশনের সাফাই মানতে চাননি আবেদনকারী হরপ্রীত মনসুখানির আইনজীবী সঞ্জয় হেগড়ে।

তার দাবি, ৩২৪ ধারায় নির্বাচন কমিশনের হাতে ব্যাপক ক্ষমতা রয়েছে। চাইলে তা প্রয়োগ করা যেতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিকে আদালতে হাজির থাকার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। সেখানে তাদের ক্ষমতা পর্যালোচনা করে দেখা হবে।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
চমক রেখে বিশ্বকাপের দল ঘোষণা দক্ষিণ আফ্রিকার Apr 30, 2024
img
উপজেলা নির্বাচনে সেনাবাহিনী নামানো সম্ভব নয়: ইসি আলমগীর Apr 30, 2024
img
৭ মে পর্যন্ত হজ ভিসা আবেদনের সময় বাড়ল Apr 30, 2024
img
আপিল করবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ২ মে পর্যন্ত স্কুল-মাদরাসার ছুটি বহাল Apr 30, 2024
img
উপজেলা নির্বাচন: দ্বিতীয় ধাপে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন আজ Apr 30, 2024
img
তাপমাত্রা ও বৃষ্টি নিয়ে নতুন তথ্য দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর Apr 30, 2024
img
এক সপ্তাহে হিটস্ট্রোকে ১০ জনের মৃত্যু, ৮ জনই পুরুষ Apr 30, 2024
img
জি কে শামীমের জামিন ঘিরে আবারও প্রতারণা, আইনজীবীকে আদালতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা Apr 30, 2024
img
সকালে খালি পেটে পানি পানের ৯ সুফল Apr 30, 2024
img
যেসব জেলায় মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে আজ Apr 30, 2024