ব্যাট হাতে টপ অর্ডাররা ব্যর্থ হলেও শেষ দিকে ১৭ বলে ৩৫ রানের ছোট্ট ক্যামিও ইনিংস খেলেছিলেন শামিম পাটোয়ারি। আর তাতেই ফাইটিং স্কোর দাঁড়িয়ে যায় বাংলাদেশের। তারপরও শঙ্কা ছিল এত কম রান নিয়ে জিততে পারবে তো টাইগাররা। কিন্তু বল হাতে সব সমীকরণ পাল্টে দেন তাসকিন-সাকিব-রিশাদ-শেখ মাহেদিরা। এতে করে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ জয় পায় ২৭ রানে। এ জয়ের ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ৬ বছর পর সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ। সবশেষ ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা।
বাংলাদেশের দেয়া টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই উইন্ডিজকে জোড়া ধাক্কা দেন তাসকিন। ওভারের প্রথম ও পঞ্চম বলে ফিরিয়েছেন ব্রান্ডন কিং (৫ বলে ৮) ও আন্দ্রে ফ্লেচারকে (৪ বলে ০)। চতুর্থ ওভারে জনসন চার্লসকে (১৪) এলবির ফাঁদে ফেলেন শেখ মাহেদি।
এরপরেই স্লিপে সৌম্য সরকারকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নিকোলাস পুরান (৫)। স্বস্তি নিয়েই পাওয়ারপ্লে শেষ করে সফরকারীরা। আগের ওভারেই রোভম্যান পাওয়েলের ক্যাচ ছাড়েন সৌম্য। কিন্তু পরের ওভারে কোনও ভুল হয়নি মিরাজের। হাসান মাহমুদের দারুণ ডেলিভারিতে তালুবন্দি হন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক। শূন্য রানে জীবন পাওয়া পাওয়েল ৭ বলে এক চারে করেন ৬।
ক্যারিবিয়ানদের উইকেট শিকারের মিছিলে যোগ দিয়েছেন পেসার তানজিম হাসানও। ৮.৩ ওভারে নতুন ব্যাটার রোমারিও শেফার্ডকে ক্যাচ আউটে ফিরিয়েছেন তিনি। ৫ বল খেলে রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি। ৪২ রানে স্বাগতিকদের ৬ উইকেট তুলে নেওয়ার পর প্রতিরোধ গড়েন রোস্টন চেজ ও আকিল হোসেন।
হাসানকে টানা দুই ছক্কা মেরে ম্যাচে ফেরে উইন্ডিজ। তবে পরের ওভারেই ডেঞ্জারম্যান চেজকে তুলে নেন রিশাদ। ৩৪ বলে ৩২ রান করে থামেন চেজ। পরের বলেই মোতিকে ফেরান রিশাদ। হ্যাটট্রিকের সুযোগ থাকলেও তা হতে দেননি আলজারি জোসেফ। তবে জোসেফকে পরের ওভারেই ফিরিয়েছেন তানজিম সাকিব। শেষ পর্যন্ত ১০২ রানেই থমকে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
সেন্ট ভিনসেন্টে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। ইনিংসের শুরুতেই মাত্র ১১ রানেই ২ উইকেট হারানোর পর পুরো ইনিংসেই দলকে টেনে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন ব্যাটাররা। লিটন দাসের ব্যর্থতা অব্যাহত রয়েছে। ১০ বল খেলে মাত্র ৩ রান করে আকিল হোসেনের বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন তিনি। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে দলীয় ৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
লিটনের বিদায়ের পর দ্রুতই বিদায় নেন তানজিদ হাসান তামিম। রোস্টন চেজের বলে বোল্ড হওয়ার আগে মাত্র ৪ বলে ২ রান করেন। প্রথম ধাক্কা সামাল দিতে সৌম্য সরকার এবং মেহেদি হাসান মিরাজ কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। তবে তাদের জুটি বেশি দূর এগোতে পারেনি। সৌম্য ১৭ বলে ১৬ রান করে আউট হলে দলীয় ৩৯ রানে ভেঙে যায় এই জুটি। তার বিদায়ের পরই মিরাজও ২৫ বলে ২৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন।
সৌম্য ও মিরাজের বিদায়ের পর দ্রুতই পতন ঘটে দলের নিচের দিকের ব্যাটারদের। রিশাদ হোসেন ৪ বলে ৫ রান করে গুড়াকেশ মোতির বলে বোল্ড হন। এরপর মেহেদী হাসান (১১ বলে ১১ রান) এবং জাকের আলী (২০ বলে ২১ রান) দলকে বড় সংগ্রহ এনে দিতে ব্যর্থ হন।
৮৮ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে তখন বেশ চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সেই চাপের মধ্য থেকেই দারুণ এক ইনিংস খেলেন শামীম হোসেন পাটওয়ারী। শেষ মুহূর্তে তানজিম হাসান সাকিবকে নিয়ে ২৩ বলে ৪১ রানে জুটি গড়েন শামীম। দুই চার ও দুই ছক্কায় ১৭ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। অন্য প্রান্তে ১১ বলে ৯ রানে অপরাজিত সাকিব। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৯ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।