গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বুলি আওড়ানো যুক্তরাষ্ট্র নিজ দেশেই সংবাদকর্মীর বাকস্বাধীনতা রোধ করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বাইডেন প্রশাসনের ফরেইন সেক্রেটারি হিসেবে শেষ সংবাদ সম্মেলনে এসে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের তোপের মুখে পড়েন অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। উত্তেজিত সে পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি জোর করে বের করে দেন দুই সাংবাদিককে।
ওয়াশিংটনে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। এ সময়, গত ১৫ মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধ ঘিরে নিজের কূটনৈতিক তৎপরতার পক্ষে কথা বলছিলেন ব্লিনকেন। তার বক্তব্যের পর প্রশ্ন উত্তর পর্বে, ফিলিস্তিনের গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে নিরপরাধ মানুষ হত্যাকারী ইসরায়েলকে সমর্থনের অভিযোগ এনে ব্লিনকেনকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন ওই সাংবাদিকেরা।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির সমালোচক হিসেবে পরিচিত স্বাধীন সাংবাদিক স্যাম হুসেইনি চিৎকার করে বলেন, ‘অপরাধী! আপনি কেন হেগে নেই।’ তিনি নেদারল্যান্ডেসের হেগ শহরের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে ইঙ্গিত করেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিং কক্ষে ফরেইন সেক্রেটারিকে প্রকাশ্যে অপরাধী আখ্যা দিয়ে উচ্চবাচ্চ করায় তাকে বের করে দিতে নিরাপত্তা কর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়। সে সময়ও অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের উদ্দেশে অবমাননাকর নানা প্রশ্ন ছুড়তে থাকেন তিনি।
কেবল হুসেইনি নয়, ইসরায়েল-হামাস সংঘাতে ইসরায়েলকে কূটনৈতিক সমর্থন, অস্ত্র সহায়তা দিয়ে আসায় ক্ষুব্ধ হন ম্যাক্স ব্লুমেনথাল নামের আরেক সাংবাদিক। ব্লিঙ্কেনকে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, গত মে মাসে যখন গাজায় যুদ্ধ বিরতি চুক্তি হয়েছিল তখন যুক্তরাষ্ট্র কেন ইসরায়েলকে বোমা ও অস্ত্র সহায়তা পাঠিয়েছিল? যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির কট্টর সমালোচক ব্লুমেনথালকেও নিরাপত্তাকর্মীরা ওই কক্ষের বাইরে নিয়ে যান।
অবশ্য এবারই প্রথম নয়, গাজা ইস্যুতে ওয়াশিংটনে বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের বিব্রতকর প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে ব্লিঙ্কেনকে। যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা ভার্জিনিয়ায় তার বাসার সামনে কয়েক মাস ধরে ঘাঁটি গেড়ে ছিলেন। এমনকি তারা দফায় দফায় ব্লিঙ্কেন ও তার পরিবারের সদস্যদের গাড়িতে রক্তের প্রতীক হিসেবে লাল রং ছুড়ে মারতেন। আগামী সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ফরেইন সেক্রেটারির দায়িত্ব থেকে বিদায় নেবেন অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
টিএ/